উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাল্টাপাল্টি দোষারোপ

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরকে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করেছে। ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রুশ সামরিক উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুই দেশ একে অপরকে দায়ী করেছে।

গত বুধবার ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী রাশিয়ার বেলগোরোদ অঞ্চলে দেশটির একটি সামরিক উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। মস্কোর দাবি, ওই উড়োজাহাজে রুশ বাহিনীর হাতে বন্দী হওয়া ইউক্রেনের ৬৫ সেনাসদস্য ছিলেন। বন্দিবিনিময় পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ওই সেনাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেন গুলি করে তাদের আইএল-৭৬ উড়োজাহাজটিকে ভূপাতিত করেছে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ উপদূত দিমিত্রি পোলিয়ানস্কির নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের অনুরোধে গতকাল নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়।

বৈঠকে পোলিয়ানস্কি অভিযোগ করেন, উড়োজাহাজ ভূপাতিত করার ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। তাঁর দাবি, ইউক্রেনের নেতৃত্বের কাছে ওই পথটি খুব ভালো করে চেনা ছিল। তাঁরা জানতেন, ও পথেই সেনাদের বন্দিবিনিময়ের জায়গায় নেওয়া হবে।

রুশ উপদূত পোলিয়ানস্কির অভিযোগ, পশ্চিমা ভূরাজনৈতিক স্বার্থ মেটাতে ইউক্রেন নিজেরাই তাদের সেনাদের উৎসর্গ করেছে। তিনি বলেন, এমন নয় যে এটি দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম বন্দিবিনিময়ের ঘটনা। তবে এবার কিয়েভ কিছু ব্যাখ্যাতীত কারণে এ প্রক্রিয়াটি নস্যাৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তারা যতটা সম্ভব সবচেয়ে বর্বর কায়দায় কাজটি করেছে।

পোলিয়ানস্কি মনে করেন, উড়োজাহাজের পাইলটরা এটিকে আবাসিক এলাকা থেকে ঘুরিয়ে জনবসতিহীন স্থানে নিয়ে যাওয়ায় বিধ্বস্তের এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। এ জন্য ওই পাইলটদের ‘বীরত্বের’ প্রশংসা করেন তিনি।

তবে পূর্বপরিকল্পিতভাবে উড়োজাহাজটি ভূপাতিত করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইউক্রেন। জাতিসংঘে নিযুক্ত দেশটির উপদূত খ্রিস্টিনা হায়োভিশিন বলেন, যানবাহনের সংখ্যা কত হবে, কোন কোন সড়ক ব্যবহার করা হবে, বন্দীদের কী ধরনের পরিবহনে করে আনা হবে, তা ইউক্রেনকে জানানো হয়নি।

আরও পড়ুন

ইউক্রেনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, সমঝোতা অনুযায়ী বন্দিবিনিময়ের জন্য ইউক্রেনের পক্ষ থেকে রুশ বন্দীদের যথাস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাশিয়ার হাতে বন্দী থাকা ইউক্রেনীয় বন্দীদের জন্য একই ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা ছিল। ওই উড়োজাহাজে যদি সত্যিই ইউক্রেনীয় সেনারা থেকে থাকেন, তাহলে এ ঘটনার মধ্য দিয়ে রাশিয়া আবারও মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।