ক্ষুদ্র ‘মাল্টিরোটর সোলার ড্রোন’ উদ্ভাবনে বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর সাফল্য

ক্ষুদ্রতম মাল্টিরোটর সোলার ড্রোনছবি: সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নাল থেকে

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রোবোটিকস বিজ্ঞানী হাসান শহীদের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের বিজ্ঞানীরা ক্ষুদ্রতম ‘মাল্টিরোটর সোলার ড্রোন’ উদ্ভাবন করেছেন। ১৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৫ সেন্টিমিটার প্রস্থের মূল ফ্রেমের এই ড্রোনের ওজন মাত্র ৭১ গ্রাম।

কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় সফল হওয়া এই গবেষণা নিয়ে ‘ডেভেলপমেন্ট অব এ সোলার পাওয়ার্ড মাল্টিরোটর মাইক্রো অ্যারিয়াল ভেহিকল’ শিরোনামে বিশ্বখ্যাত ‘নেচার’ গ্রুপের ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ জার্নালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এটা নিয়ে বিশ্বখ্যাত সোলার মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘পিভি ম্যাগাজিন’ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

‘মাইক্রো সোলারকপ্টার’ নামে পরিচিত এই সিস্টেম একটি রিচার্জেবল রেডিও-নিয়ন্ত্রিত ক্ষুদ্র মাল্টিরোটর ড্রোন, যা গড়ে সাড়ে তিন মিনিট পর্যন্ত উড়তে পারে। সূর্যের আলোতে ২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় স্ট্যান্ডার্ড টেস্ট কন্ডিশনে এটি পুরোপুরি চার্জ হতে সময় নেয় ৬৮ মিনিট। সূর্যের আলো ছাড়া এটি ৩৮ দিন পর্যন্ত হাইবারনেশনে থাকতে পারে। সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে সিস্টেমটি নিজে নিজেই রিচার্জ হতে পারে।

এই ড্রোন ব্যয়সাশ্রয়ী ও কম উচ্চতায় উড়তে সক্ষম। ছোট আকারের সোলার প্যানেল ব্যবহার করে শক্তি উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে এর।

বিজ্ঞানী হাসান শহীদ কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়াল সায়েন্সের শিক্ষক ও গবেষক। তাঁর গবেষণা প্রবন্ধের সংখ্যা এক শর বেশি। সোলার ড্রোন ছাড়াও তিনি মানুষের পরিপাকতন্ত্র ইন্সপেকশন ও রোগ শনাক্ত করার উপযোগী ক্যাপসুল রোবট এবং প্রবীণ ও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের সরাসরি সহায়তা করতে পারে, এমন রোবট নিয়ে গবেষণা করছেন।

‘এন ইন্সপায়ারিং ইভিনিং উইথ রোবোটিক সায়েন্টিস্ট ডক্টর হাসান শহীদ’ শিরোনামে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের বিশেষ এক অনুষ্ঠানে সংবাদমাধ্যমের সামনে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম মাল্টিরোটর সোলার ড্রোন উদ্ভাবনের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের এতে সভাপতিত্ব করেন।

বিজ্ঞানী হাসান শহীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সোলার ড্রোন নিয়ে আমার গবেষণা অব্যাহত আছে। মাল্টিরোটর ড্রোনের উৎকর্ষতা সাধনের পাশাপাশি আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো ছোট আকারের এবং ২৫ কেজির চেয়ে কম ভরের সোলার কোয়াড প্লেনের উদ্ভাবন। এই ড্রোন হেলিকপ্টারের মতো কম উচ্চতায় উড়তে পারবে ও কোনো রানওয়ে ছাড়া ওঠানামা করতে পারবে। এটা তথ্য সংগ্রহ, পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণসহ খুব কম ভরের জিনিস পরিবহনে সহায়ক হবে।’