গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মার্কিন সাংবাদিককে আটক করেছে রাশিয়া
গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এক মার্কিন সাংবাদিককে আটক করেছে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ওই সাংবাদিকের নাম ইভান গার্শকোভিচ (৩১)। আটকের বিষয়টি গত বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) নিশ্চিত করেছে রাশিয়ার শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা।
গোপন তথ্য হস্তগত করার চেষ্টাকালে ইয়েকাতেরিনবার্গ শহর থেকে ইভান গার্শকোভিচকে আটক করা হয়েছে। ক্রেমলিন দাবি করেছে, ইভান গার্শকোভিচ হাতেনাতে আটক হয়েছে। তবে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল তা অস্বীকার করেছে।
এদিকে মার্কিন সাংবাদিককে আটকের ঘটনায় হোয়াইট হাউস কঠোর ভাষায় নিন্দা করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, ইভান গার্শকোভিচকে আটকের ঘটনায় তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা দ্রুত ইভান গার্শকোভিচে সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাননি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, মস্কো থেকে এক হাজার মাইল দূরের ইয়েকাতেরিনবার্গে কাজ করার সময় গত বুধবার ইভানের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইভানের গাড়িচালক তাঁকে একটি রেস্তোরাঁয় নামিয়ে আসার দুই ঘণ্টা পর থেকে তাঁর ফোন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, তাঁরা আইনজীবীর মাধ্যমে এফএসবির কার্যালয়ে তাঁকে খোঁজার চেষ্টা করছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, ইয়েকাতেরিনবার্গে ইভান যা করছিলেন তার সঙ্গে সাংবাদিকতার কোনো সম্পর্ক নেই।
এফএসবির দাবি, তারা অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে কাজ করার অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়েছে। তিনি রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত। তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। তাঁকে আনুষ্ঠানিক গ্রেপ্তার দেখিয়ে মস্কোর একটি আদালতে তোলা হয়েছে। আদালত ২৯ মে পর্যন্ত তাঁকে কারাগারে রাখার আদেশ দিয়েছেন।
রাশিয়ার গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সর্বোচ্চ ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, সাংবাদিক ইভান তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সম্প্রতি ইভান গার্শকোভিচ ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে রাশিয়ার ক্ষয়িষ্ণু অর্থনীতি ও সামরিক ব্যয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন।
বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) বলছে, সাংবাদিক ইভান রাশিয়ায় ভাগনার গ্রুপের ওপর কাজ করতে গিয়েছিলেন। তিনি সেখানে এক বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন। এর আগে তিনি এএফপি ও মস্কো টাইমসেও কাজ করেছেন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এটা এফএসবির দায়িত্ব। তারা ইতিমধ্যে একটি বিবৃতি দিয়েছে। এখন পর্যন্ত আমি যা বলতে পারি, তা হচ্ছে তিনি হাতেনাতে ধরা পড়েছেন।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হামলা শুরুর আগে থেকেই সেখানে সাংবাদিকতা করা অনেক কঠিন ছিল। সেখানে স্বাধীন সাংবাদিকদের বিদেশি এজেন্ট তকমা দেওয়া হয়। এর আগে বিবিসির সাংবাদিক সারাহ রেইনফোর্ডকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়।