পুলিশের গুলিতে কিশোর নিহতের ঘটনা ক্ষমার অযোগ্য, বললেন মাখোঁ
ফ্রান্সে গতকাল মঙ্গলবার একটি তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে এক কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনাকে ‘ক্ষমার অযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেন, কোনোভাবেই এই ঘটনাকে ‘সমর্থন করা যায় না’।
মঙ্গলবার সকালে ১৭ বছর বয়সী নাহেল নামের এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্যারিসের নানতেরে এলাকায় রাতভর বিক্ষোভ হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। সেখান থেকে ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পরপরই বন্দরনগরী মার্সেইতে মাখোঁ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মাখোঁ বলেন, কোনো কিছুই এই কিশোরকে হত্যার ন্যায্যতা দেবে না। তিনি ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ন্যায়বিচার করা হবে। মাখোঁ বলেন, ‘যা হয়েছে, এর জন্য পুরো জাতির মতো আমিও শোকাহত। আমরা নাহেলের পরিবারের পাশে আছি, পুরো জাতি আছে।’
ইতিমধ্যে মামলাটি আদালতে তোলা হয়েছে জানিয়ে এমানুয়েল মাখোঁ বলেন, আদালত দ্রুতই তাঁর কাজ করবেন বলে তিনি আশা করেন।
মঙ্গলবার সকালে ওই কিশোর প্যারিসের পশ্চিমাঞ্চলীয় নানতেরে এলাকায় একটি ভাড়া করা গাড়ি চালাচ্ছিল। কৌঁসুলিরা বলেছেন, সড়কের বেশ কিছু নিয়মকানুন না মানায় পুলিশ তাকে থামানোর চেষ্টা করেছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের দুজন কর্মকর্তা গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করছেন। তাঁদের একজন গাড়ির জানালা দিয়ে চালকের দিকে অস্ত্র তাক করেন। চালক গাড়ি চালানো শুরু করলে খুব কাছ থেকে গুলি করেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা। কয়েক মিটার দূরে গিয়ে গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এএফপি ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেছে।
ওই গাড়ির ভেতর চালক ছাড়াও আরও দুই যাত্রী ছিলেন। তাঁদের একজন পালিয়ে যান, আরেকজনকে গ্রেপ্তার করে নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সে-ও কিশোর বয়সী।
এরই মধ্যে ওই কিশোরকে গুলি করা পুলিশের কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও তিনি দাবি করেন, তাঁর জীবন ঝুঁকিতে, এমনটি মনে হওয়ায় তিনি গুলি করেছেন। তবে ভিডিও ফুটেজ বলছে অন্য কথা।
প্যারিস পুলিশের প্রধান লরেন্ট নু-এজ টেলিভিশন স্টেশন বিএফএমটিভিকে বলেন, পুলিশের কর্মকাণ্ড ‘প্রশ্ন তুলেছে’। যদিও তিনি মনে করছেন, পুলিশের ওই কর্মকর্তা হুমকি বোধ করে থাকতে পারেন। তবে এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন ১৭ বছরের এই কিশোরের পরিবারের আইনজীবী ইয়াসিন। তিনি বলেন, এটি অন্যায় যুক্তি। পুলিশ বলেছিল, ওই কিশোর তাদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। এমন ‘মিথ্যা’ বলায় মামলা করেছে নাহেলের পরিবার।
চলতি বছর ট্রাফিক তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে এ নিয়ে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তির মৃত্যু হলো। গত বছর এ ধরনের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছিল ১৩।