নেদারল্যান্ডসে ৩ ব্যক্তির সেই হত্যাকারী একজন শিক্ষার্থী

বন্দুকধারীকে ঠেকাতে পুলিশের সদস্যরা হাসপাতালে অবস্থান নেন
ছবি: এএফপি

নেদারল্যান্ডসের রটারডামে একটি বাড়ি এবং হাসপাতালে বন্দুকধারীর গুলিতে তিন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ৩২ বছর বয়সী ওই সন্দেহভাজন বন্দুকধারী সামরিক পোশাক পরে হামলা চালান। তিনি হাসপাতালে আগুনও ধরিয়ে দেন। পুলিশ বলছে, ওই হামলাকারী একজন শিক্ষার্থী। তাঁর বিরুদ্ধে আগে পশুর ওপর নিষ্ঠুর আচরণের অভিযোগ ছিল।

নেদারল্যান্ডস পুলিশ বলেছে, হামলার উদ্দেশ্য কী ছিল, তা জানার চেষ্টা করছে তারা।
পুলিশপ্রধান ফ্রেড ওয়েস্টেরবেকে সাংবাদিকদের বলেন, শুরুতে ওই বন্দুকধারী রটারডামের একটি বাড়িতে ঢুকে গুলি চালাতে শুরু করেন। এতে ৩৯ বছর বয়সী এক নারী নিহত হন। তাঁর ১৪ বছর বয়সী মেয়ে গুরুতর আহত হয়। পরে সে মারা যায়।

এরপর তিনি ইরাসমুস এমসি হাসপাতালের একটি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে ৪৬ বছর বয়সী এক শিক্ষককে গুলি করে হত্যা করেন। এরপর তিনি ওই হাসপাতালে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করলে, সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রোগীদের হুইলচেয়ার ও স্ট্রেচারে নিয়ে চিকিৎসাকর্মীরা ছুটোছুটি করতে থাকেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী আরটিএল নিউজকে বলেন, ‘প্রথমে পঞ্চম তলায় গুলি ছোড়া হয়। চার থেকে পাঁচটি গুলি ছোড়া হয়েছিল। এরপর শিক্ষাকেন্দ্রের দিকে একটি মলোতোভ ককটেল ছুড়ে মারা হয়।

সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এনওএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘সেখানে অনেক আতঙ্কজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। চিৎকার-চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছিল। আমি কোনো গুলির শব্দ শুনতে পাইনি, শুধু মানুষের আতঙ্ক দেখেছি, আর তা দেখেই ব্যবস্থা নিই।’

ছবিতে দেখা গেছে, মাথার ওপর দিয়ে হেলিকপ্টার উড়ে যাচ্ছে এবং পুলিশের স্নাইপারেরা হাসপাতালের ছাদে অবস্থান নিয়েছেন।

কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওই বন্দুকধারী সামরিক ধাঁচের পোশাক পরেছিলেন। তিনি লম্বা, তাঁর মাথার চুলগুলো কালো। হামলার সময় তাঁর সঙ্গে একটি ব্যাকপ্যাক ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওই সন্দেহভাজনের কাছে একটিই আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। হামলার ক্ষেত্রে তাঁর কোনো সহযোগী থাকার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সন্দেহভাজন হামলাকারী একজন শিক্ষার্থী। পশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণের জন্য এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল।

প্রধান সরকারি কৌঁসুলি হুগো হিলেনার সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেপ্তার হওয়ার পর ওই সন্দেহভাজন ব্যক্তি পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করছেন। তিনি বলেন, ‘এই ভয়াবহ ঘটনার উদ্দেশ্য কী ছিল, তা নিয়ে আমরা এখনই কিছু বলতে পারছি না। এখনো তদন্ত চলছে।’

রটারডামে প্রায়ই বন্দুকধারীর হামলার ঘটনা দেখা যায়। সাধারণত মাদকসংশ্লিষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংগুলোর মধ্যে এই ধরনের গোলাগুলি হয়ে থাকে।