অতিরিক্ত বমির কারণে সব দাঁত হারিয়েছেন অন্তঃসত্ত্বা
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে বমি বমি ভাব ও বমি করা (মর্নিং সিকনেস) সাধারণ একটি বিষয়। কিন্তু এই সাধারণ ঘটনাই যুক্তরাজ্যের এক নারীর কাছে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি করার কারণে লুইস কুপার নামের ওই নারীর সব দাঁত তুলে ফেলতে হয়েছে।
নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৬ বছর বয়সী লুইস কুপার এরপরে আরও সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
কুপার প্রথমবার অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন ২০১৭ সালে। সে সময় তিনি ফ্রান্সে একটি স্কি রিসোর্টে ন্যানির কাজ করতেন। তখন গর্ভাবস্থার এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে তাঁকে যুক্তরাজ্যে ফিরে যেতে হয়েছিল। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তাঁর হাইপারেমেসিস গ্র্যাভিডারাম (এইচজি) শনাক্ত হয়। এটি মর্নিং সিকনেসের বিরল ও চরমতম রূপ। প্রায় ১ শতাংশ অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায়।
ঘন ঘন বমি করার কারণে কুপারের দাঁত পড়ে যেতে শুরু করে। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে তিনি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। অতিরিক্ত বমিতে অ্যাসিডিটির কারণে তাঁর সব দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এ কারণে সন্তান জন্মের ছয় মাস পর তাঁর সব দাঁত তুলে ফেলতে হয়।
সন্তান জন্মের পরপরই কুপারের বমি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তিনি আরও দুই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এই দুবারই তিনি প্রথমবারের মতো হাইপারেমেসিস গ্র্যাভিডারামে ভুগেছিলেন।
লুইস কুপার বলেন, ‘এটা খুবই বেদনাদায়ক ছিল। আমার চরম শত্রুর জীবনেও যেন এমন ঘটনা না ঘটে, সেটাই কামনা করি। বারবার মনে হবে যে আপনি মারা যাচ্ছেন। এ কারণে অনেকেই বিষয়টিকে কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সঙ্গে তুলনা করে। এটা অপ্রীতিকর। এটা মানসিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল করে দেয়।’
যাই হোক, দাঁত না থাকার বিষয়টি কুপার মেনে নিতে চেষ্টা করছেন। দ্য ইনডিপেনডেন্টকে তিনি বলেছেন, ‘এখন ঠিক আছি, সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে গেছে। জীবন অনেক বেশি আরামদায়ক ও উপভোগ্য। কিন্তু এইচজি থাকলে এবং নয় মাস বিছানায় থাকলে তা আর উপভোগ্য হয়ে ওঠে না। দাঁত না থাকাটা মেনে নিয়েছি। আমি কেবল পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলার চেষ্টা করছি।’
কুপারকে এখন খাবারও বুঝে খেতে হয়। তিনি বেশি মাংস খান না। কেবল শাকসবজি খান।
কুপার আরও বলেছেন, ‘আমার নকল দাঁত আছে। কিন্তু সেগুলো কেবল প্রসাধন দ্রব্য বলে তা পরলে আরাম লাগে না। এখন আমি দাঁত ছাড়াই বাড়ি থেকে বের হতে পারি।’