ন্যাটোর সঙ্গে লড়াই করতে রাশিয়াকে অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে: রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলুসভ বলেছেন, আগামী দশকে ইউরোপে ন্যাটো সামরিক জোটের সঙ্গে লড়াই করতে মস্কোকে অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে।
মস্কোয় জাতীয় প্রতিরক্ষা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে আন্দ্রেই বেলুসভ এ কথা বলেন। বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়ার পক্ষে মোড় নিচ্ছে বলে তাঁর বিশ্বাস।
পুতিনের প্রতিরক্ষাপ্রধান আন্দ্রেই বেলুসভ গত জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত ন্যাটোর একটি শীর্ষ সম্মেলন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য ন্যাটো সদস্যদেশের সামরিক মতাদর্শের উল্লেখ করে বলেন, এসব বিষয় প্রমাণ করে, মস্কোকে আগামী বছরগুলোয় আরও দৃঢ়ভাবে এ জোটের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।
বৈঠকে বেলুসভ বলেন, আগামী দশকে ইউরোপে ন্যাটোর সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতসহ মধ্যমেয়াদি যেকোনো পরিস্থিতির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতি নিশ্চিত করার বিষয়টিকে ভিত্তি করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাপক সংস্কার ও পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছেন আন্দ্রেই বেলুসভ। এর আগে তিনি বলেছিলেন, এসব পরিবর্তন জরুরি। ভবিষ্যৎ সামরিক সংঘাতের প্রকৃতি বিবেচনায় নিয়ে এসব সংস্কারের পথে এগোচ্ছেন তিনি।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক শক্তির আধুনিকীকরণ পরিকল্পনা, পোল্যান্ডে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ঘাঁটি খোলা, ন্যাটোর নতুন যুদ্ধ প্রস্তুতির পরিকল্পনা ও ২০২৬ সালে জার্মানিতে মার্কিন মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের জন্য ন্যাটো সম্মেলনে ঘোষিত পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা করেন বেলুসভ।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের অস্ত্রভান্ডারে শিগগিরই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র (শব্দের চেয়ে দ্রুতগতির ক্ষেপণাস্ত্র) যুক্ত করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এ ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ায় পৌঁছাতে লাগবে মাত্র আট মিনিট।
একই বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, বিপুলসংখ্যক মানুষ স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। এ কারণে ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়ার পক্ষে মোড় নিচ্ছে। অনলাইনে উন্মুক্ত সূত্রের বিভিন্ন মানচিত্রে দেখা গেছে, রুশ সেনারা বর্তমানে ২০২২ সালের তুলনায় দ্রুতগতিতে ইউক্রেনের অভ্যন্তরে অগ্রসর হচ্ছেন।
পুতিন বলেন, রুশ সেনারা নিজেদের অবস্থানের পাশাপাশি কৌশলগত পরিকল্পনা শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে আছেন। শুধু এ বছরই ১৮৯টি জনবহুল এলাকা মুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, চলতি বছর প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার রুশ নাগরিক সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৩ লাখ। অর্থাৎ সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা লক্ষণীয় হারে বেড়েছে।