ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর যা বললেন বিশ্বনেতারা
রাশিয়ার কার্চ সেতুতে বিস্ফোরণের রেশ কাটতে না কাটতেই রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল কেঁপে উঠেছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায়। আজ সোমবার চালানো এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৬০ জন। হামলা নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভাষ্য, রাশিয়া আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শিকার হলে একইভাবে জবাব দেওয়া হবে। অপর দিকে কিয়েভঘনিষ্ঠ বিভিন্ন দেশ ও জোটের নেতারা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের ৮ অঞ্চলে ১১টি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ড্যানিস শিমহাল। কিছু এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। হামলায় লিভ ও খারকিভ শহর এবং খমেলনিতস্কি, সুমি ও তেরনোপিল অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও পানির সংকট দেখা দিয়েছে বলে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। হামলা হয়েছে কিয়েভ শহরে জার্মান কনস্যুলেটের একটি ভবনেও। শহরটিতে থেমে থেমে শোনা যাচ্ছে হামলার সতর্কসংকেতের শব্দ।
হামলার পরপরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে টেলিফোনে কথা বলেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। এ নিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্টের বাসভবন থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফোনালাপে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি আবারও সমর্থন জানিয়েছেন মাখোঁ। একই সঙ্গে আজকের হামলায় হতাহতের ঘটনায় ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন তিনি।
জেলেনস্কির সঙ্গে আলাপ করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজও। আলাপে তিনি কিয়েভের প্রতি বার্লিন ও শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি–৭–এর সমর্থনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অপর দিকে পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিগনিয়েভ রাউ বলেছেন, ‘এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বর্বরতা ও যুদ্ধাপরাধ। রাশিয়া এই যুদ্ধে জয় পাবে না। ইউক্রেন, আমরা তোমাদের পাশে আছি।’
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলির মতে, বেসামরিক নেতাদের ওপর রাশিয়ার হামলা ‘গ্রহণযোগ্য নয়’। এর মধ্য দিয়ে পুতিনের শক্তি নয়, বরং দুর্বলতাই প্রকাশ পেয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঘিরে সোচ্চার হয়েছে মলদোভাও। দেশটির দাবি, ইউক্রেনে রাশিয়ার ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র তাদের আকাশসীমায়ও প্রবেশ করে। এ ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে দেশটিতে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে এখনো রাশিয়ার বিরোধিতা করেনি চীন। রুশ অভিযানের সরাসরি সমর্থনও অবশ্য জানায়নি। ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই মস্কো–বেইজিংয়ের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও উন্নত হয়েছে। আজকের হামলার পর চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, শিগগিরই ইউক্রেনে সহিংসতা কমবে—এমনটি আশা করছে বেইজিং।
এদিকে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান ইয়ানেস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, তিনি ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবার সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্রেমলিনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনের সাহসী মানুষকে যত দিন দরকার হয় সমর্থন দিয়ে যাবে ন্যাটো।’