ইউক্রেনকে যে কারণে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে না জার্মানি
গত নভেম্বরে পোল্যান্ডের ভূখণ্ডে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুজন নিহত হন। এ ঘটনার পর দেশটির আকাশসীমার সুরক্ষায় পোল্যান্ডকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাঠানোর প্রস্তাব দেয় জার্মানি। পোলিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিউস ব্লাসজ্যাক তখন জার্মানিকে অনুরোধ করেন, ওই ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা তাঁর দেশে না পাঠিয়ে তা যেন ইউক্রেনে পাঠানো হয়। তবে পোল্যান্ডের সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জার্মানি। গতকাল শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা পোল্যান্ডের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।
টোবিয়াস লিন্ডনা নামের ওই কর্মকর্তা বলেন, প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ন্যাটো জোটের সম্মিলিত প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। এটির ব্যাপারে একা একা সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার জার্মানির নেই।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, হুট করে ইউক্রেনের মতো তৃতীয় পক্ষকে দেওয়ার মতো প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র বার্লিনের সংগ্রহে নেই। এর বদলে ন্যাটোর পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাঠিয়ে পোল্যান্ডের নিরাপত্তা জোরদার করার প্রস্তাব দিয়েছে জার্মানি।
মার্কিন প্রতিষ্ঠান রেথিয়নের তৈরি প্যাট্রিয়টের মতো স্থলভিত্তিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলো মূলত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
নভেম্বরের শেষের দিকে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিন ল্যামব্রেখটও বলেছিলেন, এই প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ন্যাটোর সমন্বিত আকাশ প্রতিরক্ষার অংশ। এর মানে হলো এগুলো ন্যাটো জোটের আওতাধীন এলাকায় মোতায়েন করতে হবে। ন্যাটোভুক্ত এলাকার বাইরে এ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে হলে আগে জোট ও মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। কিন্তু ইউক্রেন তো ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্র নয়।
সম্প্রতি পোলিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিউস ব্লাসজ্যাক বলেছেন, জার্মানি তাঁর প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি মর্মাহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, পোল্যান্ড এখন নিজেদের কমান্ড সিস্টেমে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা যুক্ত করার জন্য কাজ করবে।
স্নায়ুযুদ্ধের সময় ন্যাটোর সম্মুখসারির সদস্য জার্মানির কাছে ৩৬টি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ছিল। এ সংখ্যা কমে এখন ১২টিতে দাঁড়িয়েছে। তার মধ্যে দুটি স্লোভাকিয়ায় মোতায়েন রয়েছে।
নভেম্বরে ইউক্রেন সীমান্তবর্তী পোল্যান্ডের গ্রামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুজন নিহত হওয়ার পরপরই ইউক্রেন ও পশ্চিমা মিত্রদের পক্ষ থেকে এর জন্য রাশিয়াকে দায়ী করা হয়। পরে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদাও বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি ইউক্রেনীয় বাহিনী ছুড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি দিক পরিবর্তন করে পোল্যান্ডে পড়েছে।
সূত্র: আরটি