রাশিয়ার বিরুদ্ধে ফেসবুক-গুগলের যেসব পদক্ষেপ
ফেসবুকের পর গুগলও রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়ের পথ বন্ধ করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই দুই জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান। খবর রয়টার্স ও দ্য ভার্জের।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম থেকে একে একে বিধিনিষেধ আসতে শুরু করেছে।
গত শুক্রবার ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার নিরাপত্তা নীতির প্রধান নাথানিয়েল গ্লিচার এক টুইট বার্তায় বলেন, মেটার যেকোনো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন চালানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাশিয়ার এ গণমাধ্যমগুলোর ওপর তারা লেবেল প্রয়োগ করে যাচ্ছে।
এর আগে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যমের ফেসবুকে পোস্ট করা খবরের তথ্য সত্যতা যাচাই (ফ্যাক্ট চেকিং) ও লেবেল প্রয়োগ চালু করেছিল মেটা। রাশিয়া মেটার এ পদক্ষেপ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু মেটা তা প্রত্যাখ্যান করে। ফলে মেটার কিছু পরিষেবার ব্যবহার সীমাবদ্ধ করে রাশিয়া।
ফেসবুকের পর গুগলও রাশিয়ার সরকারি গণমাধ্যমের ওপর বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়ের পথ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
শনিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যম আরটিসহ অন্য চ্যানেলগুলোর তাদের ওয়েবসাইট, অ্যাপ ও ইউটিউবের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন থেকে আসা অর্থ গ্রহণ সুবিধা স্থগিত করেছে গুগল।
গুগলের ইউটিউব ইউনিট ইউক্রেনে চলমান পরিস্থিতিতে ‘অস্বাভাবিক পরিস্থিতি’ উল্লেখ করে বলেছে, ইউটিউবে প্রচার করা ভিডিওর জন্য এ চ্যানেলগুলো কোনো অর্থ পাবে না। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে যুক্ত কিছু রাশিয়ান চ্যানেলও রয়েছে।
গুগলের মুখপাত্র মাইকেল আসিম্যান জানিয়েছেন, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত গণমাধ্যমগুলো তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও অ্যাপগুলোর মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের অর্থ গ্রহণ করতে পারবে না। তারা গুগল টুলসের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন কিনতে পারবে না বা সার্চ ও জি-মেইলের মতো সেবায় বিজ্ঞাপন দিতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, গুগল ইউক্রেনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
ইউটিউবের মুখপাত্র ফরশাদ শাদলু বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা গণমাধ্যমের ওপর ভিডিওগুলোর সুপারিশ কম আসবে। এ ছাড়া ইউক্রেন সরকারের অনুরোধের পর আরটি ও আরও কয়েকটি চ্যানেল ইউক্রেন থেকে আর দেখা যাবে না।
গত বুধবার রাশিয়ার সরকার-নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আরটির প্রধান সম্পাদক মার্গারিটা সিমোনিয়ানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। রাশিয়া সরকারের হয়ে প্রোপাগান্ডা চালানোর ক্ষেত্রে মূল ব্যক্তি হিসেবে তাঁকে দায়ী করা হয়েছে।
এদিকে রাশিয়ায় কিছু ব্যবহারকারীর টুইটার পরিষেবা সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। গত শনিবার একটি টুইট বার্তায় এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি জানিয়েছে, তাদের পরিষেবা নিরাপদ এবং অভিগম্য রাখতে কাজ করছে। তবে ইন্টারনেট মনিটরিং গ্রুপ নেটব্লক্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া টুইটারে অভিগমন ব্লক করেছে।