টিকা রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করছে ইইউ
করোনাভাইরাসের টিকা রপ্তানিতে কড়া বিধিনিষেধ জারি করবে বলে সতর্ক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সরবরাহ পরিকল্পনায় কাটছাঁটের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইইউ।
বিবিসির আজ মঙ্গলবারের খবরে জানা যায়, স্বাস্থ্যবিষয়ক কমিশনার স্টেলা কিরিয়াকাইডস বলেন, নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ নেবে ইইউ।
গত সপ্তাহে অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানায়, উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কিছু জটিলতার কারণে ইইউকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী টিকা সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ধীরগতিতে টিকা সরবরাহ করায় সমালোচনার মুখে পড়েছে ইইউ। সদস্য সব দেশের জন্য টিকা কিনেছে সংস্থাটি।
যুক্তরাজ্যে ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকা সরবরাহের ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারে। যুক্তরাজ্যের সরকার বলেছে, টিকা সরবরাহকারীদের সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখছে।
যুক্তরাজ্য সরকারের মুখপাত্র বলেন, অগ্রাধিকারভিত্তিতে চারটি দলের কাছে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রথম ধাপের টিকা পৌঁছানোর সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
ইইউ সদস্যভুক্ত কয়েকটি দেশে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা সরবরাহে কাটছাঁটের জন্য টিকাদান কর্মসূচি ধীরগতিতে চলছে। কয়েকটি দেশ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকিও দিয়েছে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক কমিশনার স্টেলা কিরিয়াকাইডস টুইটে জানান, স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার তিনি অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু অ্যাস্ট্রাজেনেকার বক্তব্য অসন্তোষজনক এবং তাদের ব্যাখ্যায় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, টিকা সম্প্রসারণের ফলে সামাজিক দায়িত্ব পালনে ইইউ সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ।
কিরিয়াকাইডস বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে তাঁরা অনুরোধ করেছেন পরবর্তী বৈঠকে টিকা সরবরাহ নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা জানাতে। আগামী বুধবার পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
স্বাস্থ্য কমিশনার সতর্কতা জারি করে বলেছেন, ভবিষ্যতে ইইউয়ের অন্তর্ভুক্ত টিকা উৎপাদনকারী সব প্রতিষ্ঠানকে তৃতীয় যেসব দেশে তারা টিকা রপ্তানি করতে চায়, সে বিষয়ে আগাম বার্তা দিতে হবে। তবে এ বিষয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোনো মন্তব্য করেনি।
গত সপ্তাহে অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানায়, উৎপাদনসংক্রান্ত জটিলতার কারণে ইইউ সদস্যভুক্ত দেশগুলোয় টিকার প্রাথমিক ডোজ প্রত্যাশার চেয়ে কম পরিমাণ হতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, মার্চ মাসের মধ্যে ২৭টি দেশে আট কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি ঘাটতি ঠিক কী পরিমাণ হবে। তবে কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলছেন, ৩ কোটি ১০ লাখ টিকা সরবরাহ কমতে পারে।
ইইউর ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ) অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন দেয়নি। তবে এ মাসের শেষে টিকাটি অনুমোদন পেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।