অস্ট্রেলিয়ায় পার্লামেন্ট ভবনের ছাদে ফিলিস্তিনের সমর্থনে ব্যানার ঝুলিয়ে দিলেন বিক্ষোভকারীরা

অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্ট ভবনের ছাদে উঠে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরাছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় পার্লামেন্ট ভবনের ছাদে উঠে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকজন ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী। আজ বৃহস্পতিবার কিছু ব্যানার নিয়ে তাঁরা ছাদে উঠে পড়েন এবং সেগুলো ওপর থেকে ঝুলিয়ে দেন।

এদিকে বিক্ষোভকারীরা এ সময় ফিলিস্তিনের মুক্তি চেয়ে স্লোগানও দিতে থাকেন। তবে বিক্ষোভের এ ঘটনাকে পার্লামেন্টের নিরাপত্তার গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছেন আইনপ্রণেতারা।

আরও পড়ুন

কালো পোশাকে চার ব্যক্তিকে প্রায় এক ঘণ্টা পার্লামেন্ট ভবনের ছাদে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তাঁরা ছাদ থেকে নিচের দিকে কালো রঙের যেসব ব্যানার ঝুলিয়ে দেন, সেগুলোর একটিতে লেখা ছিল, ‘নদী থেকে সমুদ্র, ফিলিস্তিন থাকবে মুক্ত।’এটি ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে পরিচিত একটি স্লোগান।

বিক্ষোভকারীদের একজন একটি মেগাফোন ব্যবহার করে বক্তব্য দেন। তিনি ইসরায়েল সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তোলেন। ওই বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমরা ভুলব না। আমরা ক্ষমা করব না এবং আমরা প্রতিরোধ করে যাব।’

রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ঘটনার সময় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য ভবনের প্রধান প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে লোকজনকে ওই পথ এড়িয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেন। আরও কয়েকজন সদস্য ছাদে উঠে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

আরও পড়ুন

স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে বিক্ষোভকারীরা তাঁদের ব্যানারগুলো গুটিয়ে নেন।

অস্ট্রেলিয়ার ছায়া মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র জেমস পিটারসন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘এটি পার্লামেন্টের নিরাপত্তার গুরুতর লঙ্ঘন। অনেক খরচ করে এ ধরনের অনুপ্রবেশ ঠেকানোর উপযোগী করে ভবনটিকে তৈরি করা হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত করা প্রয়োজন।’

গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায়। ইসরায়েলের দাবি, এ সময় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। এ ছাড়া প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা। জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় নারকীয় তাণ্ডব শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, এ হামলায় উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজারের মতো মানুষ নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

আরও পড়ুন

গত মাসে জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই যুদ্ধাপরাধ করেছে। বেসামরিক পর্যায়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধনের মধ্য দিয়ে ইসরায়েল মানবতাবিরোধী অপরাধও করেছে।

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শহরগুলোতে সাপ্তাহিক বিক্ষোভ এবং এক মাস ধরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের ঘটনা আছে।

অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি গত সোমবার সিনেটর ফাতিমা পেম্যানকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করেছে। ফিলিস্তিনকে সমর্থন করে সিনেটে উত্থাপিত একটি প্রস্তাবে নিজ দলের বিপক্ষে গিয়ে ভোট দেওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অস্ট্রেলিয়া এখনো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়নি। যদিও গত মে মাসে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক শান্তিপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়া এ স্বীকৃতি দিতে পারে।

আরও পড়ুন