৮১ বছর বয়সে নামলেন সুন্দরী প্রতিযোগিতায়

দক্ষিণ কোরিয়ার ৮১ বছর বয়সী মডেল চে-সুন হুয়াছবি: রয়টার্স

বয়স যখন তাঁর বিশের কোঠায়, তখন স্বপ্ন ছিল ফ্যাশন মডেল হওয়ার। কিন্তু জীবনযুদ্ধের চাপে সে স্বপ্ন অধরা থেকে গেলেও পাঁচ দশক পর বৃদ্ধ বয়সে তা বাস্তবে ধরা দিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার চে-সুন হুয়ার বয়স ৮১ বছর। মাথার সব চুল পেকে সাদা হয়ে গেছে। কিন্তু বয়স তাঁর কাছে সংখ্যামাত্র। তাই তো এই বয়সেই সুন্দরী প্রতিযোগিতা ‘মিস ইউনিভার্স কোরিয়া’য় সর্বজ্যেষ্ঠ প্রতিযোগী হিসেবে অংশ নিয়ে ইতিহাস গড়েছেন।

মিস ইউনিভার্স কোরিয়ায় অংশগ্রহণের বয়সসীমা ছিল ১৮ থেকে ২৮ বছর। তবে এবার বয়সসীমা উঠিয়ে নেওয়ায় এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পান চে-সুন হুয়া। তিনি বলেন, ‘সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বয়সসীমা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে শুনে আমি ভাবলাম, বাহ্‌, দারুণ। এ সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না।’

বিজয়ী হতে না পারলেও প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব পর্যন্ত জায়গা করে নিয়েছিলেন এই অশীতিপর। কম বয়সী প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে লড়াই করে তিনি জিতে নিয়েছেন ‘বেস্ট ড্রেসড অ্যাওয়ার্ড’।

সন্তানের দেখভাল ও আর্থিক সচ্ছলতার জন্য তরুণ বয়সে ফ্যাশন মডেল বা সিনেমার তারকা হওয়ার স্বপ্ন এক পাশে সরিয়ে রেখে চাকরিতে যোগ দেন চে। হাসপাতালে রোগীদের পরিচর্যার কাজ করতেন তিনি। একদিন এক রোগী তাঁকে পরামর্শ দেন, ৭২ বছর বয়সে পা রাখার পর তিনি জ্যেষ্ঠ মডেল ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে পারবেন। এ ঘটনার পরই মূলত তাঁর জীবন বদলে যায়।

চে চাকরির পাশাপাশি একটি মডেলিং একাডেমিতে ভর্তি হন। রাত বাড়লে হাসপাতালের কর্মপরিবেশ যখন শান্ত হয়ে আসত, তখন তিনি ক্যাটওয়াক করতেন এবং আয়নার সামনে পোজ দিতেন। এভাবেই মডেলিং চর্চার বর্ণনা দেন কোরিয়ার এই বৃদ্ধা।

এর পর থেকে চে-সুন হুয়ার কর্মজীবন বদলে যায়। তিনি একাধিক ফ্যাশন শোতে অংশ নেন। ম্যাগাজিনে তাঁর ছবি ছাপা হয়। বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে সম্প্রচার করা হয় তাঁর জীবনের গল্প।

চে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘জীবনের দ্বিতীয়ার্ধে এসে আমি জিতে গেছি। প্রথম ভাগে কোনো অর্জন ছাড়াই ছুটছিলাম। অবশেষে সাফল্য ধরা দিয়েছে।’

মিস ইউনিভার্স কোরিয়ার আরেক জ্যেষ্ঠ মডেল উন মি-ইয়ুং। তাঁর বয়স ৫৯ বছর। তিনি জানান, চে-সুন হুয়াকে দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

উন মি-ইয়ুং বলেন, ‘যখন তাঁকে (চে-সুন হুয়া) প্রথম টিভিতে দেখি, তখন তাঁকে দারুণ লাগছিল। ভাবলাম, আমিও তাঁর মতো জ্যেষ্ঠ মডেল হব।’