চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘে এক বিতর্কে পাকিস্তান–ইন্দোনেশিয়াসহ মুসলিম কয়েকটি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবারজাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে অনুষ্ঠিত এ খসড়া প্রস্তাবের ভোটদানে বিরত ছিল ব্রাজিল–ভারত ইউক্রেনসহ কয়েকটি দেশ।
জিনজিয়াং প্রদেশে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার মিশেল ব্যাশেলেত সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। প্রতিবেদনে জিনজিয়াং নিয়ে বেইজিংয়ের নীতি মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়ে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় মিশেল ব্যাশেলেতের মেয়াদের একেবারে শেষ প্রান্তে গত ৩১ আগস্টে। এতে তুলে ধরা হয় জিনজিয়াংয়ে বসবাসকারী উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ নির্যাতন, ইচ্ছেমতো আটকে রাখা, ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন এবং সন্তান জন্মদানের অধিকার লঙ্ঘনের কথা তুলে ধরা হয়।
বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছে। তবে বরাবরই জোর দিয়ে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে বেইজিং। তারা বলেছে, ওই অঞ্চলে সন্ত্রাস মোকাবিলায় তারা প্রশিক্ষণকেন্দ্র পরিচালনা করছে।
মিশেল ব্যাশেলেতের প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নেয় যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো। কিন্তু ৪৭ সদস্যের জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে এ প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক জমে উঠলেও তা বাতিল হয়ে যায়। প্রস্তাবের পক্ষ ভোট পড়ে ১৭টি। বিরুদ্ধে ১৯ ভোট। এতে ভোটদানে বিরত ছিল ১১টি দেশ।
উইঘুর মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া ১৯টি দেশের বেশির ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। বলিভিয়া, ক্যামেরুন, চীন, কিউবা, ইরিত্রিয়া, গ্যাবন, ইন্দোনেশিয়া, আইভরি কোস্ট, কাজাখস্তান, মৌরিতানিয়া, নামিবিয়া, নেপাল, পাকিস্তান, কাতার, সেনেগাল, সুদান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান ও ভেনেজুয়েলা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে।
ভোটদানে বিরত ছিল আর্জেন্টিনা, আর্মেনিয়া, বেনিন, ব্রাজিল, গাম্বিয়া, ভারত, লিবিয়া, মালাবি, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো ও ইউক্রেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন, হন্ডুরাস, জাপান, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মন্টেনেগ্রো, নেদারল্যান্ডস, প্যারাগুয়ে, পোল্যান্ড, তুরস্ক ও অন্যান্য দেশ। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, টুইটার, এএফপি