প্রচণ্ড ঠান্ডায় জমে গিয়ে মৃত্যুর দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছিল ছোট্ট একটি বিড়ালছানা। সেটির দেহে প্রাণের কোনো চিহ্ন ছিল না। এরপরও বিড়ালছানাটিকে বাঁচাতে এক কিশোরীর প্রাণপণ চেষ্টা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহু মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। কোনো প্রাণীর প্রাণ বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করার মতো মহৎ গুণ আর কীই–বা হতে পারে।
চীনের একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। ভিডিওটি পরে অনলাইনে ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ভিডিওতে এক চীনা কিশোরীকে হেয়ার ড্রায়ার (চুল শুকানোর যন্ত্র) দিয়ে টেবিলের ওপর নিথর হয়ে পড়ে থাকা একটি বাদামি রঙের বিড়ালছানার শরীরে খুব সাবধানে গরম বাতাস দিতে দেখা যাচ্ছে। কিশোরীটি হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে বিড়ালছানাটির সারা গায়ে বাতাস দিচ্ছে আর আকুল হয়ে কাঁদছে। কাঁদতে কাঁদতে তার হেঁচকি উঠে গেছে। কিন্তু বিড়ালছানাটিকে বাঁচানোর জিদ সে একমুহূর্তের জন্যও ছাড়েনি।
ঘটনাটি ঘটেছে চীনের হুবেই প্রদেশে। কিশোরীটি কাঁদছিল আর বিড়ালছানাটির গায়ে বাতাস দিয়ে যাচ্ছিল। বিড়ালছানাটির বেঁচে থাকার কোনো লক্ষণই ছিল না। তারপরও সে আশা ছাড়েনি। সে একইভাবে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে বিড়ালছানাটির গায়ে গরম বাতাস দিয়ে সেটির শরীর উষ্ণ করে তোলার চেষ্টা করতে থাকে।
কিশোরীটির সেই মরিয়া চেষ্টা বিফলে যায়নি। মেয়েটির বাবা বলেন, বিড়ালছানাটি হয়তো আর বেঁচে নেই, এমন কথা বলার পরও তাঁর মেয়ে জিদ ধরে ছিল। সে কিছুতেই হাল ছাড়েনি, হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে বিড়ালছানাটির গায়ে ক্রমাগত গরম বাতাস দিয়ে যেতে থাকে। চরম ধৈর্যসহকারে প্রায় দুই ঘণ্টা সে এ কাজ করে গেছে। একসময় বিড়ালছানাটি নড়ে ওঠে।
কিশোরীর বাবা পুরো ঘটনার ভিডিও করেন। পরে তিনি সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। শিরোনাম দেন, ‘দুই ঘণ্টার জিদ এবং চেষ্টার পর, বিড়ালছানাটি জীবন ফিরে পেয়েছে’।
ভিডিওর শেষ ভাগে চমৎকার একটি সোয়েটার পরা বিড়ালছানাটিকে বাড়িতে দুধ পান করতে দেখা গেছে। এভাবেই ভালোবাসা, জিদ, কান্না আর একটি হেয়ার ড্রায়ার বাঁচিয়ে দিয়েছে একটি প্রাণ।