ঋণের ফাঁদে ফেলতে অভিনব কৌশল
চীনের একটি প্রতিষ্ঠানে অভ্যর্থনাকারী হিসেবে এক তরুণীর চাকরি হয়। প্রতি মাসে তাঁর বেতন ধরা হয় ৪ হাজার ১০০ ইউয়ান। কিন্তু এই তরুণীর দাবি, চাকরি দেওয়ার ছলে তাঁকে আসলে ঋণের ফাঁদে ফেলা হয়েছে।
এই তরুণীর নাম প্রকাশ করেনি সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। তারা শুধু তাঁর পদবি চেন বলে জানিয়েছে। গত ২১ নভেম্বর তাঁর চাকরি হয়।
সাক্ষাৎকারের সময় তরুণী চেনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কসমেটিক সার্জারিতে তাঁর আগ্রহ আছে কি না। চেন তখন মনে করেছিলেন, এটি হয়তো এমনিতেই জানতে চাওয়া হচ্ছে। কারণ, প্রতিষ্ঠানটি কসমেটিক সার্জারি নিয়েই কাজ করে। তাই তাঁর কাছে এ ধরনের প্রশ্ন অদ্ভুত মনে হয়নি।
যাই হোক, চাকরির চুক্তিপত্রে সই করার পর থেকে প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মী তাঁকে অনবরত কসমেটিক সার্জারি (অস্ত্রোপচার) করাতে চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, এটি করলে তাঁর ক্যারিয়ার ভালো হবে।
কিন্তু চেন তাঁদের বলেন, তিনি এখনো স্নাতক শেষ করতে পারেননি। এখন এমন অস্ত্রোপচারের খরচ বহন করার অবস্থা তাঁর নেই। তখন ওই তরুণীর সহকর্মীরা কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য ঋণ নিতে তাঁকে প্ররোচিত করতে থাকেন।
এরপর চেন ২৫ হাজার ইউয়ান (১ ইউয়ান=১৫.৪৭ টাকা হিসাবে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৬৬৮ টাকা) ঋণ নিয়ে নাকে কসমেটিক সার্জারি করান। ওই অর্থ পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে তাঁকে পরিশোধ করতে হবে।
চেন কাজে ফেরার পর দেখলেন, তাঁকে অভ্যর্থনার পদ থেকে কনসালট্যান্টের পদে বদলি করা হয়েছে। আর তাঁর সহকর্মীরা এই পদে তাঁর পেশাগত দক্ষতা নিয়ে সমালোচনা শুরু করেন।
এই পরিস্থিতিতে চেনের মনে বিশ্বাস জন্মে, তাঁকে চাকরি দেওয়া মূলত একটি ফাঁদ। অনলাইনে তাঁকে নিয়ে যে নেতিবাচক রিভিউ করা হচ্ছে, এতে তাঁর সন্দেহ আরও ঘনীভূত হলো।
চেন বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির অভ্যর্থনাকারীর কোনো দরকার নেই। আমার বিশ্বাস, এই চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল শুধু আমাকে সার্জারির জন্য ঋণ নিতে প্রলুব্ধ করতে। অস্ত্রোপচারের পর তারা আমাকে ছাঁটাইয়ে পথ খুঁজতে শুরু করে। গত ১০ ডিসেম্বর চেন পদত্যাগ করেন।