২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

হংকং নিয়ে চীনের নতুন আইনের রূপরেখা

বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনেরখসড়া অনুযায়ী, বেইজিং হংকংয়ের বিদ্যমান স্বাধীন আইনি ব্যবস্থাকে অগ্রাহ্য বা বাতিল করতে পারবে। ছবি: রয়টার্স
বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনেরখসড়া অনুযায়ী, বেইজিং হংকংয়ের বিদ্যমান স্বাধীন আইনি ব্যবস্থাকে অগ্রাহ্য বা বাতিল করতে পারবে। ছবি: রয়টার্স

হংকং নিয়ে সম্প্রতি চীনের পাস করা বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের এক রূপরেখা গত শনিবার রাতে প্রকাশ করেছে বেইজিং। সমালোচকেরা বলছেন, এ আইনে হংকংবাসীর রাজনৈতিক ও নাগরিক স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে। আর আধা স্বায়ত্তশাসিত এই শহরে চীনের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ ও খবরদারি বাড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, আইনের খসড়া অনুযায়ী, বেইজিং হংকংয়ের বিদ্যমান স্বাধীন আইনি ব্যবস্থাকে অগ্রাহ্য বা বাতিল করতে পারবে। এ ছাড়া নতুন নিরাপত্তা আইন কার্যকর করতে চীনের মূল ভূখণ্ডের কর্মকর্তারা হংকংয়ে একটি জাতীয় নিরাপত্তা অফিস প্রতিষ্ঠা করবেন। বিশ্লেষকেরা বলেন, এটি হলে এই নগরীর স্বায়ত্তশাসন আরও খর্ব হবে।

চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়, এখন আইনের এই খসড়া পর্যালোচনা করে দেখছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় আইনপ্রণেতারা। খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা–সংক্রান্ত সব মামলা বিচারকদের শুনানির জন্য বাছাই করা হবে, সেই ক্ষমতা থাকবে হংকংয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের। আর হংকংয়ের আদালতে যখন এ–সংক্রান্ত ফৌজদারি মামলার বিচার চলবে তখন, নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে জাতীয় নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করেছে—এমন ঘটনার মামলায় চীনের মূল ভূখণ্ডের নিরাপত্তা শাখাগুলোর কর্তৃত্ব খাটানোর এখতিয়ার থাকবে।

সিনহুয়ার খবরে বলা হয়, এই নির্দিষ্ট পরিস্থিতির স্বরূপ আইনের খসড়ায় ব্যাখ্যা করা হয়নি। তবে আইনে যেসব কর্মকাণ্ডকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদ, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নষ্ট করে এমন কাজ, সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তাকে বিপদের মুখে ফেলার লক্ষ্যে বিদেশি বা অভ্যন্তরীণ শক্তির সঙ্গে আঁতাত।

>

সমালোচকেরা বলছেন, এ আইনে হংকংবাসীর রাজনৈতিক ও নাগরিক স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে।

গত শনিবার চীনের বার্তা সংস্থাটি আরও বলেছে, হংকংয়ে বেইজিংয়ের যে জাতীয় নিরাপত্তা অফিস থাকবে, সেটি স্থানীয় কর্মকর্তাদের
জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক নীতিনির্ধারণে নির্দেশনা দেবে ও তা তদারক করবে। সেই সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও সেগুলো বিশ্লেষণ করবে এ অফিস।

এদিকে হংকংয়ের সরকার সেখানে একটি জাতীয় নিরাপত্তা কমিশন গঠন করবে। এর প্রধান হবেন এ নগরের বর্তমান প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম। ওই কমিশনে বসার জন্য একজন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ দেবে বেইজিং। সিনহুয়ার তথ্য অনুযায়ী, আধা স্বায়ত্তশাসিত এই অঞ্চলের স্থানীয় আইনগুলো যখন সংগতিপূর্ণ বলে বিবেচনা হবে না, তখন নতুন নিরাপত্তা আইনের ধারাগুলো প্রযোজ্য হবে।

বিশ্লেষকেরা বলেন, এই আইন হংকংয়ের বিচারব্যবস্থাকে খর্ব করবে। আইনটি চূড়ান্তভাবে পাস হলে তা হংকংয়ের আইনসভাকে পাশ কাটিয়ে প্রয়োগ করবে বেইজিং।

এই রূপরেখা প্রকাশের প্রতিক্রিয়ায় ক্যারি লাম বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষায় গৃহীত আইনি পদক্ষেপের প্রতি হংকং সরকারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক কাজ করছে তাঁর সরকার।