২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সিরিয়া যুদ্ধের ১০ বছর, প্রতিদিন প্রাণ যাচ্ছে ৮৪ জনের

সিরিয়ার ইদলিব শহরের একটি বাড়ি। সিরিয়ার অনেক এলাকার চিত্র এখন এমনই
ছবি: এএফপি

২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ায় সংকটের সূচনা। সমাধান আজও হয়নি। এর মধ্যে পেরিয়ে গেছে ১১ বছর। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ও যুদ্ধ নিয়ে বিশ্ববাসী সরব, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভুগলেও সিরিয়া নিয়ে উদ্বেগ কম। সেই সিরিয়া যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, দীর্ঘ যুদ্ধে সিরিয়ায় প্রতিদিন গড়ে ৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শিশুও আছে। মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশিই হবে। কারণ, এ হিসাব করা হয়েছে কেবল যুদ্ধে সরাসরি যারা মারা গেছে, তাদের ধরে।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, সিরিয়া যুদ্ধে গত ১০ বছরে ৩০ লাখ ৬ হাজার ৮৮৭ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে। এ সংখ্যা দেশটির যুদ্ধপূর্ব মোট জনসংখ্যার প্রায় ১ দশমিক ৫ শতাংশের সমান। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় ৮টি তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে নিহত হওয়ার এ পরিসংখ্যান দিয়েছে। ২০১১ সালের ১ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত যুদ্ধের প্রথম ১০ বছরে মানুষের মৃত্যুর আনুমানিক হিসাব দেওয়া হয়েছে এ প্রতিবেদনে। এত মানুষের মৃত্যুতে যুদ্ধে জড়িত পক্ষগুলোর বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতিকে সম্মান না দেখানোর বিষয়টিও সামনে এসেছে প্রতিবেদনে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাশেলে বলেছেন, এ প্রতিবেদনে সংঘাত-সম্পর্কিত হতাহত হওয়ার পরিসংখ্যানগুলো কেবল বিমূর্ত সংখ্যা নয়, এগুলো পৃথক মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছে। এই ৩০৬৮৮৭ সংখ্যাটি বেসামরিক নাগরিকদের প্রত্যেকের হত্যার প্রভাব তাদের পরিবার এবং সম্প্রদায়ের ওপর গভীরভাবে ফেলবে।

যুদ্ধ শুরুর আগে সিরিয়ার জনসংখ্যা ছিল ২ কোটি ২০ লাখ। তাদের অর্ধেকের বেশি যুদ্ধের কারণে উদ্বাস্তু হয়েছে
ফাইল ছবি: এএফপি

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মৃত্যুর আনুমানিক এই পরিসংখ্যানের চেয়ে প্রকৃত মৃত্যু এখনো আরও বেশিই হবে। কারণ, এই হিসাব কেবল যুদ্ধে সরাসরি যারা মারা গেছে, তাদেরই ধরা হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধের প্রভাবে খাবার, পানি কিংবা স্বাস্থ্যসেবা না পেয়ে যাদের পরোক্ষ মৃত্যু হয়েছে, তাদের এ হিসাবে ধরা হয়নি। এমনকি, যুদ্ধে নিহত অবেসামরিক মানুষের (সেনা, পুলিশ, যোদ্ধা ও অন্যান্য) সংখ্যাও এখানে ধরা হয়নি।

এর আগের জাতিসংঘ বলেছিল, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ায় ১ কোটি ৪৬ লাখের বেশি মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন ছিল। তাদের মধ্যে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ চরম সংকটে ভুগছে। দেশটিতে প্রতিদিন ১ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ পর্যাপ্ত খাবার পায় না। প্রায় ৫ লাখ সিরীয় শিশু ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছে।

আরও পড়ুন

২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। নিজ দেশের শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে জনগণের, বিশেষত বেকার তরুণদের প্রতিবাদ আসে বিক্ষোভ থেকে। তারুণ্যের সেই প্রতিবাদ দমাতে খড়্গ হাতে তুলে নেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। রক্ত ঝরে রাজপথে। সেই শুরু, এরপর দেশটির সংঘাত রূপ নেয় গৃহযুদ্ধে। এতে একে একে জড়িয়ে পড়ে আঞ্চলিক শক্তি থেকে শুরু করে বৈশ্বিক পরাশক্তিরা। প্রাণ যায় কয়েক লাখো মানুষের। দেখা দেয় ইতিহাসের ভয়াবহতম মানবিক সংকটের।

আরও পড়ুন