শ্রীলঙ্কায় অনাস্থা প্রস্তাব আনছেন বিরোধীরা, আলোচনার আহ্বান সরকারের
নজিরবিহীন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কায় এবার সরকারের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনার ঘোষণা দিয়েছেন বিরোধীরা। কয়েক দিন ধরে রাজপথেও চলছে বিক্ষোভ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিক্ষোভকারীদের আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এ দ্বীপরাষ্ট্রের সরকার।
শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধী জোট এসজেবি আজ বুধবার জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে পার্লামেন্টের অধিবেশন বসলে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও তাঁর বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে। জোটের জাতীয় সমন্বয়ক এরান বিক্রমারত্নে বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি। সাধারণ মানুষের এখন আর সরকারের প্রতি আস্থা নেই। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।
স্বাধীনতা–পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বড় সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমায় আমদানিতে ভাটা পড়ে নিত্যপণ্যের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। দেখা দিয়েছে তীব্র জ্বালানিসংকট। দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎহীন থাকছে রাজধানী কলম্বোসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকা। এসবের প্রতিবাদে শ্রীলঙ্কাজুড়ে দানা বেঁধেছে সরকারবিরোধী আন্দোলন। বিক্ষোভকারীরা রাজপথে তাঁবু টানিয়ে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছে, শান্তিপূর্ণ উপায়ে চলমান সংকট সমাধানে বিক্ষোভকারী রাজি থাকলে তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। প্রধানমন্ত্রী আলোচনার জন্য তাঁদের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানাবেন।
বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, রাজপথে টানা বিক্ষোভ ও পার্লামেন্টে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের হুমকি থাকায় শ্রীলঙ্কা সরকার নমনীয় আচরণ করছে। আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধান করতে চাইছে।
এদিকে আর্থিক সংকটে নিজেদের ঋণখেলাপি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। দেশটির এখন বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ১০০ কোটি মার্কিন ডলার। খেলাপি হওয়ার অর্থ হলো, শ্রীলঙ্কা সরকার এই ঋণ আপাতত পরিশোধ করতে পারবে না।
সংকট নিরসনে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর নন্দনাল ওয়েরাসিংহে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিদেশে বসবাসরত শ্রীলঙ্কানদের আহ্বান জানিয়েছেন। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে ব্যাংক হিসাব খুলেছে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক।