ভোটের পরীক্ষায় টিকে যাচ্ছেন ফুমিও কিশিদা

রোববার নির্বাচনের পর টোকিওতে দলের প্রধান কার্যালয়ে ক্ষমতাসীন এলডিপির নেতা ও প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা
ছবি: রয়টার্স

জাপানের সদ্য শেষ হওয়া সাধারণ নির্বাচন ছিল প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার জন্য বড় এক চ্যালেঞ্জ। মাত্র প্রায় এক মাস আগে দায়িত্ব গ্রহণের পর দ্রুত সাধারণ নির্বাচন ডেকে নিজের কিছুটা ভঙ্গুর অবস্থানকে শক্ত করে নিতে চেয়েছিলেন কিশিদা। আজ রোববার গভীর রাতে প্রাপ্ত নির্বাচনের অনানুষ্ঠানিক ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে, পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ক্ষমতাসীন উদার গণতন্ত্রী দল এলডিপির আসনসংখ্যা আগের চেয়ে কিছুটা কমলেও সেই লক্ষ্য অর্জনে তিনি সফল হয়েছেন।

জাপানের সংবাদমাধ্যমের নির্বাচন-পূর্ব বিশ্লেষণ এবং একাধিক জনমত জরিপ এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিল যে বিপর্যয় এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হলেও সংসদীয় আসনের বড় একটি অংশ ক্ষমতাসীন দল সম্ভবত ধরে রাখতে পারবে না। ভোট গণনার পর প্রাথমিক ফলাফল বলছে, সে রকম বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় এলডিপির জন্য দেখা দিচ্ছে না। ফলে দলের ভেতরে প্রধানমন্ত্রীকে কেন্দ্র করে দেখা দেওয়া সংশয় আপাতত কিশিদার ভবিষ্যৎ হয়তো বিপন্ন করবে না।

রোববারের নির্বাচনে ভোট-পরবর্তী জরিপ ও প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, অল্প কয়েকটি আসনের ভোট গণনা শেষ না হলেও ক্ষমতাসীন এলডিপি এবং সরকারের অংশীদার কোমেই পার্টি ৪৬৫ আসনবিশিষ্ট পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সম্মিলিতভাবে অন্তত ২৮৬টি আসন লাভ করতে যাচ্ছে। জোট সরকারের জন্য এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা করে দেবে। বিগত সংসদে জোটের মোট আসন ছিল ৩০৫টি।

অন্যদিকে বিরোধী জোট আসনসংখ্যা কিছুটা বাড়িয়ে নিতে সক্ষম হলেও প্রধান বিরোধী দল সাংবিধানিক গণতন্ত্রী পার্টি আগের ১১০টি আসন ধরে রাখতে সক্ষম হয়নি। ফলে বিরোধী দলের নেতা ইয়ুকিও এদানোকে দলের ভেতরে সমালোচনার মুখে পড়তে হতে পারে। এবারের নির্বাচনে অপ্রত্যাশিত সাফল্য পেয়েছে মূলত ওসাকা ও পশ্চিম জাপানভিত্তিক দল জাপান ইনোভেশন পার্টি, জাপানি ভাষায় যে দলটি নিপ্পন ইশিন নামে পরিচিত। পূর্ববর্তী সংসদে দলের আসনসংখ্যা ছিল ১১। এবার তা বেড়ে হচ্ছে ৩৭টি। এই দল বিরোধী দলের কাতারে অবস্থান করলেও এলডিপির সঙ্গে কিছু প্রশ্নে একই অবস্থানে রয়েছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নিপ্পন ইশিনের সাফল্য এলডিপির জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়তো হবে না।

নির্বাচনের আগের বিভিন্ন জরিপে ভোটারদের বড় একটি অংশকে সিদ্ধান্তহীন অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে, বিরোধী জোট তাদের অকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়নি এবং শেষ মুহূর্তে এদের ক্ষমতাসীনদের দিকে ঝুঁকে পড়াটা এলডিপির জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। এবারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৫৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ২০১৭ সালের নিম্নকক্ষ নির্বাচনের চেয়ে যা সামান্য বেশি। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে বিরাজমান নিরুৎসাহ দূর হওয়ার ইঙ্গিত এটা দিচ্ছে না।