ব্ল্যাকআউটে বিদ্যুৎহীন মধ্য এশিয়ার তিন দেশের লাখো মানুষ
বড় ধরনের ব্ল্যাকআউটের কারণে গতকাল মঙ্গলবার মধ্য এশিয়ার তিনটি দেশের লাখো মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ছিল। খবর বিবিসির
দেশ তিনটি হলো কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান ও কাজাখস্তান। একটি যৌথ বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর এই তিন দেশের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত এই তিন দেশের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা বিলম্বিত হয়। অন্যান্য গণপরিবহনব্যবস্থায় মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় সময় গতকাল সকালের দিকে এই ব্ল্যাকআউট হয়। বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্নপরবর্তী বিপর্যয় প্রায় দিনভর চলে। সন্ধ্যার দিকে বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগ চালু হয়।
দেশ তিনটির পাওয়ার গ্রিডগুলো একটির সঙ্গে আরেকটি যুক্ত। পাওয়ার গ্রিডগুলো সোভিয়েত আমলে তৈরি একটি বিদ্যুৎলাইন দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত।
বিদ্যুৎ সরবরাহের এই লাইন কাজাখস্তানের ভেতর দিয়ে গেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত বিদ্যুৎসংকট দেখা দিলে এই লাইনের মাধ্যমে এসব দেশ রাশিয়া থেকে বিদ্যুৎ পেয়ে থাকে।
গ্রিড অপারেটর কেইজিওসি জানিয়েছে, একটি বড় ধরনের জরুরি ভারসাম্যহীনতার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান ও উজবেকিস্তানের বেশ কয়েকটি শহরে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের খবর পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার বেশির ভাগ বাসিন্দা পানি, পেট্রলপাম্প ও ইন্টারনেট পরিষেবা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
এ ছাড়া জরুরি চিকিৎসাব্যবস্থা সচল রাখার জন্য হাসপাতালগুলো জেনারেটরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। পাতালরেলগুলো সুড়ঙ্গে আটকা পড়ে।
রুশ বার্তা সংস্থা আরআইএ নভস্তির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাফিক লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে যানজট সৃষ্ট হয়। শহরের মেট্রোরেল যোগাযোগব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ অবতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বিদ্যুৎ না থাকায় উজবেকিস্তানের সবচেয়ে বড় স্কি রিসোর্ট আমিরসোতে স্কি করতে যাওয়া লোকজন কেব্ল কারে দীর্ঘ সময়ে ধরে আটকা পড়ে।
তিন দেশ একসঙ্গে বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর গত শতকের সত্তরের দশকে নির্মিত এই বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থার অবস্থা কতটা নাজুক, তা সামনে এসেছে।