ব্যাবিলনকে বিশ্বঐতিহ্যের মর্যাদা দিল ইউনেসকো
প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার ঐতিহাসিক শহর ব্যাবিলনকে বিশ্বঐতিহ্যের অংশ বলে ঘোষণা করেছে ইউনেসকো। চার হাজার বছরের পুরোনো স্থানটিকে জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ তালিকার অন্তর্ভুক্ত করতে ১৯৮৩ সাল থেকে তদবির করছিল ইরাক। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে গত রোববার শুরু হওয়া বিশ্বঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম অধিবেশনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
ব্যাবিলন বিখ্যাত তার ঝুলন্ত উদ্যানের জন্য। প্রাচীন বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের তালিকায় ছিল এর নাম।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাবিলনের বিস্তর ক্ষতি হয়েছে। এখানে প্রথমে ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের জন্য একটি প্রাসাদ নির্মাণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে ইরাক দখল করে নেওয়া মার্কিন সৈন্যরাও ঘাঁটি গাড়ে এখানে।
নতুন করে কোন স্থানগুলো বিশ্বঐতিহ্যের মর্যাদা পেতে পারে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বাকুতে এক হয় জাতিসংঘের বিশ্বঐতিহ্য কমিটি। বিশ্ব মানবতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান বা স্থাপনাগুলোকে এ মর্যাদা দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে স্থানগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
নতুন এই পদবিকে স্বাগত জানিয়েছেন ইরাকের প্রতিনিধিরা। একে ব্যাবিলন ও মেসোপটেমিয়া সভ্যতার তাৎপর্যের স্বীকৃতি হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ইউনেসকো বলে, হাম্মুরাবি ও নেবুচাডনেজারের মতো শাসকের অধীনে নব্য ব্যাবিলনীয় সাম্রাজ্যের সৃষ্টিশীলতার সেরা সময়ের প্রতিনিধিত্ব করে ব্যাবিলন। প্রাচীন বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম অংশ ঝুলন্ত উদ্যান এই শহরেরই প্রতিনিধিত্ব করে। বিশ্বব্যাপী শৈল্পিক, জনপ্রিয় ও ধর্মীয় সংস্কৃতিতেও উদ্যানটি অনুপ্রাণিত করেছে।
তবে ব্যাবিলন ‘অত্যন্ত হুমকির মধ্যে’ রয়েছে জানিয়ে সতর্ক করেছে ইউনেসকো। জরুরি ভিত্তিতে সদ্য বিশ্বঐতিহ্যের মর্যাদা পাওয়া স্থানটির সংরক্ষণ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে তারা।
বিশ্বঐতিহ্যের মর্যাদা পাওয়া নতুন স্থানগুলো
ইরাকের ব্যাবিলন ছাড়াও পশ্চিম আফ্রিকার বুর্কিনা ফাসোর প্রাচীন লৌহ নির্মিত ধাতুবিদ্যার স্থান, ব্রাজিলের পারাতি ও ইলহা গ্র্যান্ডে, আইসল্যান্ডের ভাতনাজ কুল জাতীয় উদ্যান, ফ্রান্সের ফ্রেঞ্চ অস্ট্রাল ভূমি ও সমুদ্র, আলবেনিয়ার ওহরিড অঞ্চলের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ইউনেসকোর বিশ্বঐতিহ্যের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
নিউইয়র্কভিত্তিক বিশ্ব স্মৃতিস্তম্ভ তহবিলের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী লিসা অ্যাক্রেম্যান বিবিসিকে বলেন, ব্যাবিলনকে রক্ষা করার ব্যাপারে ১২ বছর ধরে ইরাক সরকারের সঙ্গে কাজ করছে তাঁদের প্রতিষ্ঠানটি। এমন একটি ধ্বংসপ্রায় স্থানকে বিশ্বঐতিহ্যের মর্যাদা দিতে কয়েক দশক সময় লাগা অস্বাভাবিক নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।