পালিয়ে থাইল্যান্ডে ঢোকা মিয়ানমারের নাগরিকদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে
জান্তা সরকারের প্রতিশোধমূলক বিমান হামলার মুখে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছিলেন মিয়ানমারের প্রায় তিন হাজার গ্রামবাসী। তবে শরণার্থী হিসেবে থাইল্যান্ডে ঠাঁই হয়নি তাঁদের। জোরপূর্বক তাঁদের অনেককেই দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মিয়ানমারের অধিকার সংগঠনের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত শনিবার কারেন জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন থাইল্যান্ড সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকায় মিয়ানমারের একটি সেনাচৌকিতে হামলা চালায়। এতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার এক সেনা কর্মকর্তাসহ ১০ জন নিহত হন। মারা যান সংগঠনটির একজন সদস্যও।
এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে শনিবার রাতেই মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মুতরা জেলায় কারেনদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অন্তত পাঁচটি এলাকায় বিমান হামলা চালায় দেশটির সশস্ত্র বাহিনী। বিমান হামলা হয়েছে বাস্তুচ্যুত লোকজনের স্থানীয় একটি আশ্রয়শিবিরেও। হামলার সময় গ্রামবাসী জঙ্গল ও পাহাড়ের ঢালে লুকিয়ে প্রাণ বাঁচান। এরপর সকাল হলে তিন হাজারের মতো গ্রামবাসী শরণার্থী হিসেবে সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ড চলে যান।
মিয়ানমারের সংগঠন ফ্রি বার্মা রেঞ্জার্সের প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড ইউবাঙ্ক জানান, আজ সোমবার সকালে থাইল্যান্ড থেকে জোর করে ২ হাজারের বেশি গ্রামবাসীকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁরা সীমান্ত পেরিয়ে এসে এখন মিয়ানমার অংশের ই থু হতা আশ্রয়শিবিরে অবস্থান করছেন।
পালিয়ে আসা গ্রামবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সমালোচনা করেছে থাইল্যান্ডের মানবাধিকার সংগঠনগুলো। থাইল্যান্ড ফর হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জ্যেষ্ঠ গবেষক সুনাই ফাসুক টুইটারে লিখেন, থাইল্যান্ডের এমন হৃদয়হীন ও বেআইনি উদ্যোগ এখনই বন্ধ করতে হবে।
আজ সকালেই থাই প্রধানমন্ত্রী প্রাউত চান-ওচা বলেছিলেন, তাঁর সরকার মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থীদের গ্রহণে প্রস্তুত রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পরও শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাচ্ছে দেশটি।
মিয়ানমারে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাজধানী নেপিডোতে আয়োজিত সেনা কুচকাওয়াজে যেই আটটি দেশের কূটনীতিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন, তার মধ্যে থাইল্যান্ড একটি। এই ইস্যুতে বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হতে হয়েছে থাইল্যান্ডসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে। জান্তার নির্বিচারে মানুষ হত্যায় সমর্থনের অভিযোগ উঠেছে এসব দেশের বিরুদ্ধে। তবে থাই প্রধানমন্ত্রী প্রাউত চান-ওচা বলেছেন, সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংসতা কেউ সমর্থন করতে পারে না।