নারী কর্মকর্তার আত্মহত্যা, দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবাহিনীর প্রধানের পদত্যাগ
এক নারী কর্মকর্তার আত্মহত্যার পর দুঃখ প্রকাশ করে পদত্যাগ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবাহিনীর প্রধান লি সিওয়ং-ইয়ং। স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার পদত্যাগ করেছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, গত মার্চে দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবাহিনীর এক নারী কর্মকর্তা যৌন হয়রানি ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগে একই পদবির তাঁর এক সহকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের এক দিন পর বিমানবাহিনীর প্রধান লি সিওয়ং-ইয়ং পদত্যাগ করেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন বিমানবাহিনী প্রধানের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। প্রেসিডেন্টের তথ্যসচিব বলেন, লি সিওয়ং-ইয়ংকে গত সেপ্টেম্বরে বিমানবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে কম সময়ের জন্য এই পদে দায়িত্ব পালন করলেন।
যৌন হয়রানির শিকার ওই নারীর পরিবারের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার পর থেকে তিনি মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন এবং প্রতিনিয়ত মানসিক পীড়নের শিকার হচ্ছিলেন। বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল এবং গত দুই মাস তাঁকে চুপ থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল।
এক বিবৃতিতে লি সিওয়ং-ইয়ং বলেন, ‘আমি দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। নিহত ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। এ ঘটনায় আমারও দায় আছে। আমি পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছি।’
গত মঙ্গলবার ওই নারীর পরিবার ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিচারের দাবিতে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে একটি আবেদন জমা দেয়। এরপরই কোরিয়াজুড়ে এ নিয়ে হইচই পড়ে যায়। পরিবারে পক্ষ থেকে দেওয়া আবেদনে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ২৬ হাজার মানুষ স্বাক্ষর করেছেন।
পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট মুন। বিমানবাহিনী ঘটনাটি কীভাবে পরিচালনা করেছে, সেটাও খতিয়ে দেখতে বলেছেন প্রেসিডেন্ট। এদিকে আত্মহত্যা করা ওই নারীর পরিবার বিমানবাহিনীর তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। দুজনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও বল প্রয়োগের অভিযোগ এবং একজনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছে তারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত দুজনকে কোনো রকমের কারণ দর্শানো ছাড়াই চাকরিচ্যুত করেছে বিমানবাহিনী।