দুর্নীতি মামলায় সু চির ৫ বছরের কারাদণ্ড
দুর্নীতি মামলায় মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রাজধানী নেপিদোতে স্থাপিত সেনা সরকারের একটি বিশেষ আদালত আজ বুধবার এই রায় ঘোষণা করেন। ৬ লাখ ডলার ও ১১ দশমিক ৪ কেজি সোনা ঘুষ নেওয়ার অপরাধে তাঁকে এ সাজা দেওয়া হয়। খবর রয়টার্সের।
সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতির ১১টি মামলার প্রথমটির রায় আজ ঘোষণা করা হলো। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে পাঁচ বছর মিয়ানমারের নেতৃত্ব দেন এই নোবেলজয়ী। তাঁর বিরুদ্ধে ১৮টি অভিযোগ আনা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে এসব মামলায় তাঁর সর্বোচ্চ ১৯০ বছর সাজা হতে পারে।
আদালত বসার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিচারক রায় ঘোষণা করেন বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়। রুদ্ধদ্বার বিচারকাজ চলায় সূত্রটি নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি। বিচার সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশে বিধিনিষেধ রয়েছে।
এখন পর্যন্ত অং সান সু চি দুটি তুলনামূলক ছোট অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং তাঁর ছয় বছরের সাজা হয়েছে। অন্য মামলাগুলোর রায় হতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। এতে দেশটির স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সু চির রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ নেই বললেই চলে।
মামলার বিচারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ইয়াঙ্গুনের সাবেক চিফ মিনিস্টার ফিও মিন থেইনের কাছ থেকে ৬ লাখ ডলার ও ১১ দশমিক ৪ কেজি সোনা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সু চির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। একসময় ফিওকে সু চির উত্তরসূরি মনে করা হতো।
সু চির এ শিষ্য অক্টোবরে সাক্ষ্য দেন, সমর্থন পেতে তাঁকে এই অর্থ ও সোনা দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর এই সাক্ষ্য জাতীয় টেলিভিশনে আলাদাভাবে সম্প্রচার করে সেনা সরকার। তবে এই অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ মন্তব্য করে নাকচ করে দেন সু চি।
সু চির বিচার-সম্পর্কিত তথ্যের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সেনা সরকার।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ বিচারকে প্রহসন আখ্যা দিয়েছে। তবে সেনা সরকারের দাবি, যথাযথ নিয়ম মেনেই একটি স্বাধীন আদালতে সু চির বিচার হচ্ছে। ৭৬ বছর বয়সী সু চিকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এরপর সামরিক বাহিনীর দমনপীড়নে ১ হাজার ৭০০–এর বেশি মানুষ নিহত হন। গ্রেপ্তার করা হয় ১০ হাজার।