তিমির পেটে কাপ, বোতল ও ব্যাগ
ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল পার্কের কাছের উপকূলে ভেসে আসা তিমির পেট থেকে ৬ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য উদ্ধার করা হয়েছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, উদ্ধার করা বর্জ্যের মধ্যে আছে কাপ, বোতল ও ব্যাগ।
সোমবার রাতে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে ভেসে আসে ৩১ ফুট লম্বা একটি তিমি। ঢেউয়ে ভেসে আসা মৃত তিমির পেটে স্যান্ডেল, পানির কাপসহ প্লাস্টিকের বিশাল স্তূপ পাওয়া গেছে। ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ সুলাওয়েসির ওয়াকাতবি ন্যাশনাল পার্কের কাছ থেকে সাড়ে নয় মিটার লম্বা মৃত তিমিটি উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিয়ে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ প্লাস্টিক দূষণকারী দেশটির পরিবেশবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তিমিটির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও আমরা যা দেখলাম তা সত্যিই উদ্বেগজনক।’
পার্কটির প্রধান হেরি স্যানটোসো বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ গ্রুপ ডব্লিউডব্লিউএফ এবং পার্কের সংরক্ষণ অ্যাকাডেমি তিমিটির পেট থেকে পাঁচ দশমিক নয় কেজি প্লাস্টিকের বিভিন্ন জিনিস বের করে। এর মধ্যে ছিল ১১৫টি প্লাস্টিকের কাপ, চারটি প্লাস্টিকের বোতল, ২৫টি প্লাস্টিকের ব্যাগ, দুটি স্যান্ডেল, একটি নাইলনের ব্যাগ। এ ছাড়া হরেক রকম সহস্রাধিক প্লাস্টিকের টুকরাও পাওয়া যায়।
ডব্লিউডব্লিউএফ-ইন্দোনেশিয়ার সমন্বয়ক দাউই সুপ্রাপ্তি বলেন, আমরা তিমিটির মৃত্যুর কারণ শনাক্ত করতে পারছি না। কিন্তু যে বিষয়টি দেখা গেছে, তা খুবই ভয়াবহ। যদি এর মৃত্যুর কারণ এই প্লাস্টিকই হয়, তাহলে কোনোভাবেই এটি উপেক্ষা করা যাবে না।
এ বছরের জানুয়ারিতে সায়েন্স নামক এক জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৬ কোটি মানুষের দেশ ইন্দোনেশিয়া চীনের পর বিশ্বে দ্বিতীয় শীর্ষ প্লাস্টিক দূষণকারী দেশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, অব্যবস্থাপনার কারণে প্রতি বছর দেশটিতে ৩২ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য জমা হয়, যার প্রায় ১৩ লাখ টনের শেষ জায়গা হয় সাগর।
গত মাসে সুইজারল্যান্ডের বেসরকারি দাতব্য সংস্থা দ্য ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর ন্যাচারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মানুষের ব্যবহৃত পণ্য ও বর্জ্য নিঃসরণের কারণে ভয়াবহ হুমকির মুখে রয়েছে প্রাণিজগৎ। বিজ্ঞানীদের দাবি ১৯৭০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত শুধু এই কারণেই ৬০ শতাংশ প্রাণী বিলুপ্ত হয়েছে।
গত জুনেও থাইল্যান্ড উপকূলে ভেসে আসা মৃত একটি তিমিরর পেট থেকে ৮০টি প্লাস্টিক ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছিল।