ঘণ্টায় দেড় শ কিলোমিটার গতিতে চলছিল বুলেট ট্রেনটি। এই অবস্থায় শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে চালকের। তাই ককপিট ছেড়ে সোজা চলে যান শৌচাগারে। তবে ককপিটে রেখে যান নিজের সহকারীকে, যাঁর কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। এতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজের জন্য চালক–সহকারী দুজনকেই শাস্তি ভোগ করতে হতে পারে।
জাপানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে গতকাল শুক্রবার এ খবর দিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেন্ট্রাল জাপান রেলওয়ে কোম্পানি (জেআর সেন্ট্রাল) জানিয়েছে, হিকারি ৬৩৩ নামের বুলেট ট্রেনটিতে ১৬০ জন যাত্রী ছিল। গত রোববার সকালে জাপানের কেন্দ্রীয় অঞ্চল শিজুওকায় চলাচলের সময় ওই ঘটনা ঘটে।
জেআর সেন্ট্রাল আরও জানায়, ৩৬ বছর বয়সী ট্রেনচালক (নাম প্রকাশ করা হয়নি) পেটব্যথায় ভুগছিলেন। তাই জরুরি ভিত্তিতে শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে তাঁর। তখন তিনি সহকারীকে ট্রেনের ককপিটে ডেকে নেন এবং ট্রেন চালানোর দায়িত্ব দিয়ে চলে যান যাত্রী কেবিনের একটি শৌচাগারে। তিন মিনিট পর তিনি ফিরে আসেন।
সেন্ট্রাল জাপান রেলওয়ে কোম্পানির নীতিমালা অনুযায়ী, চালকেরা যদি অসুস্থতা বোধ করেন, তাহলে তাঁদের অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের ট্রান্সপোর্ট কমান্ড সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। জরুরি মুহূর্তে ট্রেন পরিচালনার দায়িত্ব সহকারীকে দেওয়া যেতে পারে। তবে সেই ক্ষেত্রে ওই সহকারীর অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। ফলে নীতিমালা অনুযায়ী চালক ও সহকারী, দুজনই নিয়ম ভেঙেছেন।
জেআর সেন্ট্রাল বলেছে, নিয়ম ভঙ্গের কারণে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও চালক ও তাঁর সহকারী, দুজনের বিরুদ্ধেই সম্ভাব্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মাসাহিরো হায়াতসু সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এ জন্য আমরা দুঃখিত।’
সুচারুভাবে রেলওয়ে পরিচালনার জন্য বিখ্যাত জাপান। এ জন্য তারা কঠোরভাবে নিয়মকানুন মেনে চলে। বজায় রাখা হয় নিরাপত্তার উচ্চমানও। দেশটিতে ট্রেন দুর্ঘটনাও খুবই বিরল। দেশটিতে বুলেট ট্রেন চালুর নেটওয়ার্ক স্থাপনের ৫৭ বছরের ইতিহাসে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে দেশটিতে সবশেষ বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে ২০০৫ সালে। পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আমাগাসাকিতে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে গেলে ১০৭ জন নিহত হন।