ঘরপালানো সৌদি তরুণীর ঠাঁই হলো কানাডায়
ঘর ছেড়ে পালানো সৌদি তরুণী রাহাফ মোহাম্মেদ আল-কুনুন (১৮) কানাডায় আশ্রয় পেয়েছেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের ট্রুডো বলেন, ‘কানাডা সব সময় মানবাধিকার ও নারীদের অধিকার রক্ষায় তাদের পাশে দাঁড়ায়। জাতিসংঘ থেকে আল-কুনুনের পক্ষে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়ের আবেদন করা হলে আমরা তা গ্রহণ করি।’
প্রসঙ্গত, নারী অধিকার ও মানবাধিকার ইস্যুতে সৌদি-কানাডা দ্বন্দ্ব এর আগেও চরমে পৌঁছেছিল।
কানাডার এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। সংস্থাটির হাইকমিশনার ফিলিপপো গ্রান্ডি বলেন, ‘কিছুদিন যাবৎ আল-কুনুনের দুর্দশা বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। তাঁর সংকট বিশ্বজোড়া শরণার্থীদের দুর্দশার কথাই মনে করিয়ে দেয়।’
এ দিকে ইতিমধ্যেই আল-কুনুন টরোন্টোর উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বলে সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। থাইল্যান্ডের ইমিগ্রেশন পুলিশ প্রধান সুরাহাতে হাকপার্নের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, কোরিয়ান এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজে করে আল-কুনুনকে কানাডায় পাঠানো হয়েছে। পথে কিছু সময়ের জন্য উড়োজাহাজটি সিউলে যাত্রাবিরতি করবে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডা ছাড়াও আরও বেশ কটি দেশ আল-কুনুনকে আশ্রয় দিতে আগ্রহী। দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়াও রয়েছে।
এর আগে, গত শনিবার আল-কুনুন পরিবারে সঙ্গে কুয়েত যাওয়ার পথে ব্যাংককে পালিয়ে আসেন। ব্যাংকক বিমানবন্দরে আটক হওয়ার পর আল-কুনুন দাবি করেন তাঁর কাছে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা রয়েছএবং তিনি এখান থেকে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে কানেকটিং ফ্লাইট ধরবেন। কিন্তু সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে তাঁর পাসপোর্ট একজন সৌদি কূটনীতিক কেড়ে নিয়েছেন।
তবে ব্যাংককে থাকা একজন সৌদি মুখপাত্র কুনুনের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া কিংবা তাঁকে আটকে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করেন। শুরুতে থাই কর্তৃপক্ষ তাঁকে পরিবারের কাছে ফেরত পাঠাতে বদ্ধপরিকর ছিল। থাই কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল এটা তাদের পারিবারিক সমস্যা। পরে অবশ্য কুনুনকে সাময়িক ভাবে থাইল্যান্ডে থাকার অনুমতি দেয় দেশটি।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ফিরতি টিকিট নেই উল্লেখ করে কুয়েতে ফেরত পাঠানোর জন্য থাই কর্তৃপক্ষ সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরের ট্রানজিট এলাকায় একটি হোটেলের কক্ষে রাখে কুনুনকে। ফেরত পাঠানোর জন্য কুনুনকে হোটেলকক্ষ থেকে আনতে গিয়ে বিপত্তিতে পড়ে থাই কর্তৃপক্ষ। ওই তরুণী দেশে ফিরতে অস্বীকৃতি জানিয়ে নিজেকে হোটেলকক্ষে আটকে রাখেন। হোটেলকক্ষের দরজার সামনে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিছানার ম্যাট, টেবিল, চেয়ার দিয়ে রাখেন তিনি।
হোটেল কক্ষে থেকেই টুইটারে নিজের ছবি ও বক্তব্য পোস্ট করেন আল-কুনুন। তাঁকে ফেরত পাঠালে মেরে ফেলা হবে এমন কথাও বলেন তিনি। এরপরই বিষয়টি নজরে আসে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর)।