গোতাবায়ার প্রাসাদের যে বাংকার নিয়ে আগ্রহী বিক্ষোভকারীরা
শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ টেম্পল ট্রি ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিক্ষোভকারীদের দখলে রয়েছে। প্রাসাদ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। বিক্ষোভকারীরা বলেছেন, গোতাবায়ার আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা প্রাসাদ ছাড়বেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রাসাদে একটি গোপন বাংকার রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গোতাবায়া ওই গোপন পথে পালিয়েছেন। খবর এনডিটিভি
প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের গোপন এই বাংকার নিয়ে বিক্ষোভকারীদেরও আগ্রহের কমতি নেই। এনডিটিভির ভিডিওতে দেখা যায়, বাংকারটির প্রবেশমুখ একটি আলমারি দিয়ে আড়াল করা ছিল। এটিতে প্রবেশের জন্য প্রশস্ত সিঁড়ি রয়েছে। আরও রয়েছে লিফট। এটির প্রবেশমুখে ধাতুর তৈরি ভারী দরজা রয়েছে, যা সহজে ভাঙা যাবে না। কেউ চাইলেও জোর করে এটি খুলতে পারবে না। এর মধ্য দিয়ে মূলত গোপন বাংকারটির নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, দরজার চারপাশে অসংখ্য দাগ রয়েছে। অর্থাৎ, বিক্ষোভকারীদের অনেকেই হয়তো এটি খোলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল হননি।
বিক্ষোভকারীদের অনেকেই বলছেন, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া এই বাংকারে লুকিয়ে রয়েছেন। সেখানে তিনি (গোতাবায়া) দুর্নীতি করে আয় করা কোটি কোটি রুপি রেখেছেন। আবার অনেকের ধারণা, প্রাসাদ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় গোতাবায় গোপন ও সুরক্ষিত এ পথ ব্যবহার করেছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আজ দিনের শুরুতে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে থাকা ১ কোটি ৭৮ লাখ ৫০ হাজার শ্রীলঙ্কান রুপির সন্ধান পেয়েছেন। পরে তাঁরা সেই অর্থ পুলিশের হাতে তুলে দেন।
স্বাধীনতা–পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্রটি। এ পরিস্থিতি দেশটির রাজনীতিতেও উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে দিয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকায় আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে পারছে না দেশটি। এ কারণে ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে খাবার, ওষুধ ও জ্বালানির মতো অতি জরুরি আমদানি পণ্যের প্রয়োজন মেটাতে পারছে না।
বর্তমান এই দুরবস্থার জন্য শ্রীলঙ্কার অধিকাংশ মানুষ প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দায়ী করছেন। গত মার্চ থেকেই তাঁর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে রাজধানী কলম্বোসহ বিভিন্ন শহরে। গত শুক্রবার কলম্বোজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ হয়। এর ধারাবাহিকতায় শনিবারের বিক্ষোভে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট। সেই থেকে বিক্ষোভকারীরা সেখানেই অবস্থান করছেন।