খাসোগি হত্যার তদন্তে জাতিসংঘের প্রধান সাহসী নন
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্ত ‘অবশ্যই প্রয়োজন’ বলে জোর দিয়েছেন জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা। গতকাল রোববার তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই অপরাধের তদন্ত দাবি করেননি, এ বিষয়ে তিনি সাহসী ভূমিকা রাখেননি।
বিচারবহির্ভূত হত্যার বিচারের জন্য জাতিসংঘের বিশেষ দূত আগ্নেস ক্যালামার্ড জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন, ‘আমি হতাশ হয়েছি। জবাবদিহির পথে আরও কিছুটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে সুযোগ আমি তাঁকে (আন্তোনিও গুতেরেস) দিয়েছি, তা তিনি গ্রহণ করেননি।’
আগ্নেস ক্যালামার্ড বলেন, মহাসচিব খুব একটা সাহস দেখাননি, তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বাকিরাও এই ইস্যুতে তেমন একটা এগিয়ে আসেনি। কিছু না করতে ইচ্ছুকদের একটা জোট তৈরি হয়েছে।
এই মামলায় তুরস্ক গুতেরেসের কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ নিয়ে এগিয়ে আসতে পারত উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা, এটি কেবল তুরস্কের মাথাব্যথা নয়।
আগ্নেস ক্যালামার্ড বলেন, খাসোগি হত্যাকাণ্ড কোনো ঘরোয়া অপরাধ নয়।
ক্যালামার্ড বলেন, ‘আমার মতে, খাসোগি হত্যার ঘটনাটি কোনোমতেই পারিবারিক হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক তদন্ত খুব বেশি করে প্রয়োজন ছিল।’
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের খবরে জানানো হয়, জুন মাসে আগ্নেস ক্যালামার্ড খাসোগি হত্যার বিষয়ে বিশেষ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদনে তিনি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি জানান, খাসোগি হত্যা মামলার তদন্তে সৌদি ব্যর্থ হয়েছে। কে এই হত্যার আদেশ দিয়েছে, তা খুঁজে বের করতে পারেনি সৌদি।
ক্যালামার্ডের স্বাধীন তদন্ত প্রতিবেদনে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যার’ জন্য সৌদি আরবকে দায়ী করা হয়েছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রয়াত সৌদি সাংবাদিককে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে এবং পূর্বপরিকল্পিত উপায়ে হত্যা করা হয়েছে’।
রিয়াদ ইতিমধ্যে জাতিসংঘের এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক এবং সৌদি সরকারের কঠোর সমালোচক জামাল খাসোগি গত বছরের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে নিহত হন। সাবেক স্ত্রী আলা নাসিফের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের সত্যতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। তুর্কি বাগ্দত্তা হেতিস চেঙ্গিসকে বিয়ে করার কথা ছিল তাঁর।
একাধিক পরস্পরবিরোধী তত্ত্ব উপস্থাপন করার পর সৌদি আরব স্বীকার করেছে যে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের দাবি, ‘দুর্বৃত্তদের অপারেশনে’ তিনি মারা গেছেন।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, খাসোগি হত্যার বিষয়টি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের আদেশের ভিত্তিতেই হয়েছিল। তবে সৌদি আরব বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।