এবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টিভির পেজ বন্ধ করল ফেসবুক
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি ফেসবুক পেজ বন্ধের পর দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলের পেজও বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। আজ সোমবার ফেসবুকের নীতিমালাবিষয়ক পরিচালক রাফায়েল ফ্রাঙ্কেল এ তথ্য জানিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এমআরটিভি নামের চ্যানেলটি রোববার অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে। চ্যানেলটির খবরে বলা হয়, সংঘাত মানুষের জীবন হুমকির মুখে ফেলবে।
গত নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। ওই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। আটক করা হয় এনএলডির নেতা অং সান সু চিসহ দলের শীর্ষ নেতাদের। সেই থেকে রাজপথে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। শান্তিপূর্ণ ওই বিক্ষোভ দমাতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন ও বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটছে। সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন এবং নতুন নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিও জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ঠেকাতে পারছে না।
এ পরিস্থিতিতে সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার আশঙ্কায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘তাতমাদো ট্রু নিউজ ইনফরমেশন টিম’ নামের একটি ফেসবুক পেজ অপসারণ করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ফেসবুকের এক মুখপাত্র বলেন, তাঁদের বৈশ্বিক নীতিমালা অনুযায়ী মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওই পেজ নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
ভুয়া ও মনগড়া তথ্য ছড়িয়ে মানুষকে যাতে বিভ্রান্ত করতে না পারে, সে জন্যই পেজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ফেসবুকের নীতিমালাবিষয়ক পরিচালক রাফায়েল ফ্রাঙ্কেল বলেছেন, ‘এমআরটিভি আমাদের বৈশ্বিক নীতিমালা অনুযায়ী সহিংসতা ও উসকানি রোধের নীতিমালাসহ কমিউনিটির মানদণ্ড বারবার লঙ্ঘন করছিল। তাই এমআরটিভির ও এমআরটিভির লাইভ পেজ ফেসবুক থেকে অপসারণ করেছি।’
১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের নেটব্লকস নামের এক নাগরিক সংগঠন বলছে, মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে ইন্টারনেট যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এতে সু চিকে আটকের অনেক খবর জানা যাচ্ছে না। অভ্যুত্থানের তিন দিন পর ফেসবুক জানায়, মিয়ানমারে ফেসবুকের কিছু সেবা দেশটির জান্তা প্রশাসনের মাধ্যমে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।
যদিও বর্তমানে ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্ষোভ সংগঠিত করতে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। মিয়ানমারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বেশ জনপ্রিয়। শুধু সাধারণ মানুষই নন, সরকারি বিবৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশটির মন্ত্রীরাও প্রায়ই ফেসবুক ব্যবহার করেন।