অনুভূমিক অট্টালিকা
হাল আমলে অট্টালিকা কত উঁচু হতে পারে, সে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ভবননির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। সঙ্গে চলছে ভবনের নকশার প্রতিযোগিতাও। অট্টালিকার সঙ্গে তাই ‘আকাশচুম্বী’ কথাটাও এখন হরহামেশা ব্যবহৃত হয়। কিন্তু অনুভূমিক অট্টালিকার কথা কি কেউ ভেবেছে আগে—যে অট্টালিকা ওপরের দিকে উঠে যায় না, ছড়িয়ে যায় বামে ও ডানে, ভূমির সমান্তরালে? তেমন কিছুই এবার বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে চীনের আবাসন কোম্পানি ক্যাপিটালল্যান্ড। র্যাফলস সিটি চংকিং নামের এই ভবন নির্মাণ প্রকল্প প্রায় সম্পন্নের পথে।
পৃথিবীর স্থাপত্য নকশায় নতুন সংযোজন এই অনুভূমিক অট্টালিকা। এই ভবনকে ‘প্রকৌশল বিস্ময়’ বলা হচ্ছে। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চংকিং শহরের প্রাণকেন্দ্রে ভবনটি অবস্থিত। কাছেই ইয়াংসি ও চিয়ালিং নদীর সংযোগস্থল এর নৈসর্গিক আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলেছে। এটি নির্মাণ করতে খরচ করতে হয়েছে ৩৮০ কোটি ডলার। চলতি বছরের এপ্রিল-জুনে এর উদ্বোধন করা হবে। বিশ্বখ্যাত ইসরায়েলি-কানাডীয় স্থপতি মোশে সাফদি এর নকশাকার।
মোট ২২ দশমিক ৭ একর জায়গার ওপরে নির্মাণ করা হচ্ছে পুরো প্রকল্প। মোট আটটি ভবন রয়েছে এতে। আটটি ভবনের মাথায় একটি বিশাল সংযোগকারী ‘আকাশসেতু’ (স্কাইব্রিজ) রয়েছে। এই আকাশসেতুটি তৈরি করা হয়েছে একটি ভবনের আদলে। এটিকেই ‘অনুভূমিক অট্টালিকা’ বলা হচ্ছে। ২৫০ মিটার দীর্ঘ এই অট্টালিকার নাম রাখা হয়েছে ক্রিস্টাল। পৃথিবীর অন্যতম উঁচু আকাশসেতু হতে যাচ্ছে এটি। পুরো প্রকল্পটি চীনের ঐতিহ্যবাহী পালতোলা নৌকার আদলে করা হয়েছে। প্রাচীন চীনের বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল চংকিং। সে ঐতিহ্য মনে করিয়ে দেবে এই স্থাপনা।
আকাশসেতুর চমক এতেই শেষ হচ্ছে না। রাতে এর রূপ বদলে যাবে বলে জানিয়েছে নির্মাতা কর্তৃপক্ষ। পুরো আকাশসেতুটি একটি প্রকাণ্ড আলোকরশ্মিতে পরিণত হবে রাতে। আকাশে আলোর বন্যা বইয়ে দেবে এই রশ্মি।