এবার দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্টের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলফাইল ছবি: এএফপি

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির দুর্নীতিবিরোধী অনুসন্ধান ব্যুরো। গত সপ্তাহে সামরিক আইন জারিকে কেন্দ্র করে তদন্তের আওতায় থাকা ইউনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ব্যুরোর প্রধান কৌঁসুলি এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।

ইউন প্রশাসনের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার ওপরও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার হঠাৎই দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেন ইউন সুক ইওল। তবে সামরিক আইন জারির পরপরই প্রচণ্ড বিক্ষোভের মুখে তিনি তা প্রত্যাহার করে নেন। বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা ইউনের পদত্যাগ ও অভিশংসনের দাবি জানিয়েছে।

ইউনকে অভিশংসনের চেষ্টায় গত শনিবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটিও হয়েছে, তবে তা ব্যর্থ হয়। ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি) বলেছে, প্রেসিডেন্ট ‘সুশৃঙ্খলভাবে বিদায়’ না নেওয়া পর্যন্ত দলটির নেতা ও প্রধানমন্ত্রী দেশ পরিচালনা করবেন।

গতকাল রোববার জনসাধারণের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে পিপিপি নেতা হান দং হুন বলেন, পদত্যাগ না করা পর্যন্ত ইউন প্রেসিডেন্ট থাকলেও তিনি দেশের অভ্যন্তরে ও দেশের বাইরের কোনো কাজে যুক্ত হবেন না। এ সময় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হান দুক সো সরকারি কার্যক্রমগুলো সামলাবেন।

এদিকে বিরোধীরা ইউনকে অভিশংসনের চেষ্টায় প্রতি শনিবার ভোটাভুটি করার শপথ নিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকেরা দেশের নেতৃত্ব নিয়ে উদ্বেগ জানাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, এখন দেশের নেতৃত্ব কে দিচ্ছেন, সে বিষয়টি যথেষ্ট সুস্পষ্ট নয়।

আজ দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টই সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে আছেন। এর মানে, উত্তর কোরিয়ার যেকোনো সম্ভাব্য হুমকিসহ পররাষ্ট্র নীতিমালাসংক্রান্ত যেকোনো ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত ইউন নির্বাহী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

দ্য কোরিয়া হেরাল্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মিয়ংজি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক শিন ইউল বলেন, প্রেসিডেন্ট যদি তাঁর চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন আনেন, তবে তিনি আবারও নেতৃত্ব দিতে পারবেন। ইউন জোরালোভাবে বললে কেউই তাঁকে থামাতে পারবেন না।

সামরিক আইন জারির পর গত শনিবার প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে হাজির হন ইউন। সামরিক আইন জারির কারণে মানুষকে যে উদ্বেগ ও অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়েছিল, তার জন্য তিনি ক্ষমা চান। আর কোনো সামরিক আইন জারি করবেন না বলেও অঙ্গীকার করেন তিনি।

তবে বিরোধীরা তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। তারা ইউনকে অভিশংসনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবে।