মিয়ানমারে টাইফুন ইয়াগি–পরবর্তী বন্যায় শতাধিক মৃত্যু

মিয়ানমারের নাইপিদো অঞ্চলের পিনমানা শহরে বুকসমান বন্যার পানি থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধার করছেন পুলিশ সদস্যরাছবি: এএফপি

মিয়ানমারে টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসের কারণে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, ১৩৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। ৬৪ জন নিখোঁজ। যদিও আঞ্চলিক বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা এর চেয়ে আরও বেশি হতে পারে।

সংবাদ সংস্থা এএফপির তথ্যমতে, ৩ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে বাধ্যতামূলকভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ইয়াগি চলতি বছর এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন। ভিয়েতনাম, লাওস, চীনা দ্বীপ হাইনান এবং ফিলিপাইন জুড়ে ইতিমধ্যেই বিধ্বংসী রূপ দেখিয়েছে এ টাইফুন।

টাইফুনটি মিয়ানমারে পৌঁছার আগেই এর প্রভাবে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অন্তত ২৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মিয়ানমারের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলেছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩৭৫ স্কুল ও একটি মঠসহ প্রায় ৬৬ হাজার বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে কয়েক মাইল সড়ক ও বিভিন্ন অবকাঠামো। এ ছাড়াও শুক্রবার পর্যন্ত ১৮৭টি ত্রাণ শিবিরে ২ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি মানুষকে স্থান দেওয়া হয়েছে।

মধ্য মিয়ানমারের বেশির ভাগ অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির ভয়াবহ প্রভাব দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, সরকারি হিসাবের তুলনায় মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ানমারে অন্তত ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জান্তা সরকারের অনুগতদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলা হয়েছে, শুধু মানডালে অঞ্চলেই ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, টাইফুনে শনিবার পর্যন্ত ১২০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, জরুরি ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বন্যাদুর্গত এলাকায় নিয়োজিত আছেন। খাদ্য ও পানীয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তহবিল দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরুরি সেবাকর্মীরা এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও সেতু মেরামত শুরু করেছেন।

আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ইয়াগি মিয়ানমার থেকে সরে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে আগামী সপ্তাহে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে আরেকটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।