মিয়ানমারে তরুণ-তরুণীদের সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করল জান্তা
তরুণ বয়সী সব নারী-পুরুষের সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। দেশটির বিভিন্ন এলাকায় স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াইরত সশস্ত্র বিদ্রোহীদের মোকাবিলায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখনই এমন ঘোষণা এল।
মিয়ানমারে আগে থেকেই চালু থাকা বাধ্যতামূলক নিয়োগসংক্রান্ত একটি আইনকে কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দেশটির ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সব পুরুষ এবং ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী সব নারীকে অবশ্যই দুই বছর সেনাবাহিনীতে কাজ করতে হবে। আর ৪৫ বছরের বয়সসীমার মধ্যে থাকা চিকিৎসক ও এমন বিশেষজ্ঞদের বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে তিন বছর থাকতে হবে। চলমান রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় এ নিয়োগ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকে মিয়ানমারে বিশৃঙ্খলা চলছে। গত অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের জাতিগত বিদ্রোহী তিনটি গোষ্ঠীর জোট সমন্বিতভাবে অভিযান শুরুর পর দেশটির সেনাবাহিনী চাপে পড়েছে। হামলায় সেনাসদস্যদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। বিদ্রোহীদের পাশাপাশি গণতন্ত্রপন্থী যোদ্ধারাও জান্তার বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে।
১৯৬২ সালে প্রথমবার মিয়ানমারের ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর থেকে এখনকার পরিস্থিতিকে দেশটির সেনাবাহিনীর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, নতুন সেনা নিয়োগ দিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী হিমশিম খাচ্ছে। যাঁরা যোদ্ধা নন, এমন সেনা সদস্যদেরও সম্মুখযুদ্ধে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।
জান্তা মুখপাত্র জ মিন তুন রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব শুধু সেনাদের মধ্যে সীমিত না রেখে তা সব নাগরিকের মধ্যে বিস্তৃত করে দিতে হবে। তাই আমি সবাই বলতে চাই, তাঁরা যেন গর্বের সঙ্গে জনগণের সামরিক সেবা আইন অনুসরণ করে।’
সেনাবাহিনীতে নিয়োগ বাধ্যতামূলক করে ‘জনগণের সামরিক সেবা আইন’ নামের আইনটি ২০১০ সালে চালু করা হয়। তবে এত দিন তা কার্যকর করা হয়নি। আইন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীতে যোগদানের আদেশ অমান্য করলে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।