দাঁতের ব্যথায় খেতে পারছেন না সু চি, পাচ্ছেন না ‘জরুরি চিকিৎসা’: অভিযোগ ছেলের
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির ছোট ছেলে বলেছেন, তাঁর মাকে জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে না।
কিম আরিস বলেন, সু চির ‘জরুরি চিকিৎসাসেবা’র বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের অনুরোধ আটকে দিয়েছে সামরিক জান্তা।
কারা সূত্র বিবিসি বার্মিজকে জানায়, সু চি (৭৮) প্রচণ্ড দাঁতের ব্যথায় ভুগছেন। তিনি ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করতে পারছেন না।
অবশ্য সামরিক জান্তার মুখপাত্র বলেন, সু চি সুস্থ আছে। তিনি সামরিক-বেসামরিক চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন।
মিয়ানমারে সেনা–অভ্যুত্থানের পর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে সু চি আটক রয়েছেন।
অভ্যুত্থানের পর দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এতে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
গত জুলাইয়ে শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চিকে কারাগার থেকে নেপিদোর বাসায় আনা হয়। তবে তিনি এখন বন্দী অবস্থায় আছেন কি না, সেটা পরিষ্কার নয়।
সু চির দীর্ঘদিনের পরিচিত ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, তিনি দাঁতের নানা সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর রক্তচাপও কম। কারা কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, তাঁর দাঁতের সমস্যা ‘দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে’।
সূত্র জানায়, দাঁতের ব্যথা উপশম করতে সু চিকে নরম খাবার ও স্বাস্থ্যসম্মত জেলি খেতে দেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত কিম আরিস বলেন, অসুস্থ হওয়ার কারণে তাঁর মা বমি করছেন এবং ‘প্রচণ্ড মাথাধরে’ আছে।
বিবিসি বার্মিজকে খুদে বার্তায় ৪৬ বছর বয়সী আরিস বলেন, ‘একজন অসুস্থ বন্দী রোগীর চিকিৎসায় বাধা দেওয়া নির্মম নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কিছু নয়।’
সু চির ছেলে বলেন, ‘এ ধরনের দাঁতের ব্যথার কারণে কেউ যদি খাওয়াদাওয়া করতে না পারেন এবং যথাযথ চিকিৎসা না পান, তাহলে তাঁর স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যেই পড়বে।
সব রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত নির্বাসিত জাতীয় ঐক্যের সরকার মিয়ানমারের জান্তাকে চাপ দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যাতে সু চির মতো রাজনৈতিক বন্দীদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।
অনেক বিশ্বনেতা মিয়ানমারের জান্তা সরকারের দমনপীড়নের সময় আটক সু চিসহ সব রাজনৈতিক বন্দীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় গতকাল মঙ্গলবার শুরু হওয়া দ্বিবার্ষিক আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংকট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশে অব্যাহত সহিংসতার জন্য আসিয়ান ব্লক নেতারা মিয়ানমারের সামরিক জান্তার নিন্দা জানিয়েছেন।
সামরিক অভ্যুত্থানের পর এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় বছর মিয়ানমারকে আসিয়ান সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।