মিয়ানমারে পাঁচ তারকা ক্যাসিনো রিসোর্ট ফেলে পালিয়েছেন মালিক
মিয়ানমারে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত একটি পাঁচ তারকা হোটেল ও ক্যাসিনো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হোটেলের মালিক উ কিয়াও লিনের বিরুদ্ধে থাইল্যান্ডে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর এটার এ দশা হয়েছে। মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলের এই হোটেল থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত।
মিয়ানমারের তানিনথারি অঞ্চলের কাওথাউং এলাকার থাহতাই কুন দ্বীপে অবস্থিত রিসোর্টটির নাম দ্য গ্র্যান্ড আন্দামান হোটেল। ১ হাজার ৮০০ একরের দ্বীপে অনেকটা জমি নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে হোটেলটি। সেখানে খেলাধুলার কক্ষ, স্পা, কারাওকে লাউঞ্জ ও অনেক বিউটি সেলুন রয়েছে। বন্ধ হওয়ার আগে দেড় হাজারের বেশি কর্মী ছিল তাতে। এই কর্মীদের অনেকে মিয়ানমারের নাগরিক।
হোটেলের এক কর্মী বলেন, ‘এই মাসে হোটেলটি বন্ধ হয়ে গেছে। এটি আবার কবে খুলবে, তা জানি না।’ অনেকেই বলেছেন, মিয়ানমারের ব্যবসায়ীরা জুয়া খেলার জন্য প্রায়ই হোটেলটিতে যেতেন।
হোটেলটি থাইল্যান্ডের উপকূলীয় শহর র্যানগংয়ের কাছে মিয়ানমারের সীমানার ভেতরে অবস্থিত। হোটেলের ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন অনলাইন ট্রাভেল গাইডের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের ভিসা ছাড়াই থাইল্যান্ড ও বিদেশি নাগরিকেরা সেখানে যেতে পারেন।
থাইল্যান্ডের বিশেষ তদন্ত বিভাগ (ডিএসআই) সম্প্রতি ‘কোফুক’ নেটওয়ার্ক নামে একটি চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ডিএসআইয়ের ভাষ্যমতে, এই চক্র অনলাইন জুয়া থেকে অর্জিত অর্থ অন্য দেশে পাচার করে। অভিযানের অংশ হিসেবে রাজধানী ব্যাংকক, র্যানংসহ থাইল্যান্ডের অন্তত ২৭টি স্থানে জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় ডিএসআই। র্যানংয়ে উ কিয়াও লিনের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ডিএসআই জানিয়েছে, অনলাইনে অবৈধ জুয়া, অবৈধভাবে জ্বালানি রপ্তানি, কর জালিয়াতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের কারণে ১৮ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে তারা। তবে সন্দেহভাজনদের নাম–পরিচয় প্রকাশ করেনি। সংস্থাটির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ১০০ কোটি বাথের বেশি (২ কোটি ৮০ লাখ ডলার) অনলাইন জুয়ায় ব্যবহৃত হয়েছে।
ডিএসআইয়ের উপমহাপরিচালক ইয়ুতথানা প্রায়েদাম থাইল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ১৮ জনের মধ্যে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই চক্রের হোতা হোটেলমালিককে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে তাঁর এক সহযোগী ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিএসআইয়ের উপমহাপরিচালক অবশ্য হোটেলমালিকের নাম প্রকাশ করেননি। তবে তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের ওই ব্যবসায়ীর থাইল্যান্ডেরও নাগরিকত্ব রয়েছে। তিনি মিয়ানমারে পালিয়ে গেছেন। কোফুক চক্র জ্বালানি চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বলেও জানিয়েছেন থাইল্যান্ডের এই কর্মকর্তা।