৩৮০০ মিটার উঁচুতে নেপালের গ্রামে বরফ পানির বন্যা

সলুখুম্বু জেলায় হিমবাহ গলে তৈরি হয় এমন অসংখ্য হ্রদফাইল ছবি: এএফপি

নেপালের এভারেস্ট অঞ্চলে শেরপাদের একটি গ্রাম বরফ পানির বন্যায় তলিয়ে গেছে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

গতকাল শুক্রবার সলুখুম্বু জেলায় থেম নামের সেই গ্রামটিতে বন্যায় ঘরবাড়িসহ ১২টি ভবন, একটি স্কুল ও একটি ক্লিনিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রামটি সমুদ্রপৃষ্ঠ ৩ হাজার ৮০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, হিমবাহ হ্রদের তীর ভেঙে গ্রামটি প্লাবিত হয়েছে।

থেম গ্রামে রেকর্ডধারী অনেক শেরপা বসবাস করেন। প্রথম এভারেস্টজয়ী তেনজিং নোরগে শেরপাও এই গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন। তিনি এডমন্ড হিলারিকে সঙ্গে নিয়ে এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছিলেন।

নেপাল সেনাবাহিনীর মুখপাত্র গৌরব কুমার কেসি এএফপিকে বলেন, বন্যায় অন্তত ১৫টি ঘর ভেসে গেছে। উদ্ধারকারী দল গ্রামবাসীকে নিরাপদ স্থানে যেতে সহায়তা করছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ শনিবার সকালে হেলিকপ্টারে বন্যাকবলিত এলাকায় তদন্ত করতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

বন্যার কারণ সম্পর্ক জানা যায়নি। তবে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টেগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্টের (আইসিআইএমওডি) জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ অরুণ ভক্ত শ্রেষ্ঠা বলেছেন, হিমবাহের হ্রদ উপচে পড়ার কারণে এমনটা হয়েছে বলে ‘ইঙ্গিত’ দিচ্ছে। তাঁরা বিষয়টি নিশ্চিত করতে কাজ করছেন।

বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমালয়ের হিমবাহ গলে হ্রদ তৈরি হচ্ছে। প্রায়ই এগুলোর তীর তৈরি হয় আলগা পাথর ও কোনো কিছুর ধ্বংসাবশেষ দিয়ে। ফলে তৈরি হ্রদের পাড় মজবুত না হওয়ায় ভেঙে পড়ে।

গত কয়েক দশকে হিমালয় পর্বতমালার হিমবাহ গলে শত শত হিমবাহ হ্রদ তৈরি হয়েছে। ২০২০ সালে আইসিআইএমওডির একটি প্রতিবেদনে নেপালে ২ হাজার ৭০টি হিমবাহ হ্রদের কথা বলা আছে। যার মধ্যে ২১টি হিমবাহই ঝুঁকিপূর্ণ।