তুরস্কে নতুন ভূমিকম্পেও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন লোকজন
তুরস্ক-সিরিয়ায় ৬ ফেব্রুয়ারির শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৪৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। ভূমিকম্পের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় চলছে উদ্ধারকাজ। এমন মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে গত সোমবার আবারও ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্কের সীমান্তবর্তী শহর আনতাকিয়া। এতে অন্তত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ১৪ দিনের মাথায় মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের পর ভেঙে পড়েছে আরও নতুন ভবন। এমন অবস্থায় আবারও উদ্ধারকারীদের ব্যস্ততা বেড়েছে।
ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে সিরিয়াতেও। তুরস্কের দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা এএফএডি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর বেশ কয়েকটি পরাঘাত অনুভূত হয়েছে।
তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহরেতিন কোকা জানিয়েছেন, সোমবারের ভূমিকম্পে নতুন করে ২৯৪ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আর সিরিয়ায় ৪৭০ জনের মতো আহত হয়েছেন।
৬ ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোর বেশির ভাগ বহুতল ভবনই ধসে পড়েছে। এ কারণে দুর্যোগকবলিত অঞ্চলের বিশাল এলাকা ফাঁকা হয়ে গেছে। এ কারণে সোমবারের ভূমিকম্প প্রাণহানি কম হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আনতাকিয়া শহরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ধসে পড়া ভবনে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকারী দলের ব্যস্ততা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ও ভয় ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মুনা আল ওমর বলেন, ‘মনে হচ্ছিল আমার পায়ের তলার মাটি দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে।’ সাত বছরের ছেলেসন্তানকে জড়িয়ে ধরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন তিনি। ভূমিকম্পে ঘরবাড়ি হারিয়ে স্থানীয় একটি পার্কে অস্থায়ী তাঁবুতে বসবাস করছেন তিনি।
আলী মাজলুম নামের এক তরুণের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, গতবারের ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়ার পর সব৴শেষ ভূমিকম্পের সময় পরিবারের লোকদের খুঁজছিলেন। তিনি বলেন, ‘চোখের সামনে যখন দেয়াল ভেঙে পড়বে, তখন আপনি জানেন না আপনাকে কী করতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরছিলাম।’
ভূমিকম্পের পর আদানা শহরের লোকজন স্থানীয় একটি ভলিবল সেন্টারে আশ্রয় নেন। ৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম ভূমিকম্পের পর ওই সেন্টারকে আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছিল।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্প আঘাত হানার পর সোমবার রাতেই নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় ভলিবল সেন্টারটিতে আশ্রয় নিয়েছেন। সেদিন ভূমিকম্প আঘাত হানার সঙ্গে সঙ্গেই লোকজন ঘর থেকে বের হয়ে পড়েন। আগেরবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পের কথা স্মরণ করে সব ছেড়ে বের হয়ে যান তারা।