বাদকদলের নেতৃত্ব দিল রোবট

সিউলে বাদকদলের নেতৃত্ব দিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট
ছবি: রয়টার্স

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) নতুন যুগে প্রবেশ করেছে বিশ্ব। চিকিৎসাসেবা থেকে শুরু করে যুদ্ধক্ষেত্র—সর্বত্রই এআইয়ের ব্যবহার নিয়ে চলছে তোড়জোড়। এআইয়ের উত্থানের এই সময়ে শিল্প-সংগীতজগতে বিরল প্রতিভা দেখাল একটি রোবট। এই প্রথম রোবটকে বাদকদলের নেতৃত্ব দিতে দেখা গেল।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে বিরল এই দৃশ্যের দেখা মেলে। দেশটির জাতীয় বাদকদলের পারফরম্যান্সের নেতৃত্ব দেয় ‘এভার ৬’ নামের একটি অ্যান্ড্রয়েড রোবট।

রোবটটির নকশা করেছে কোরিয়া ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি। কোরিয়ার জাতীয় নাট্যশালায় হয় এর অভিষেক। এতে রোবটটিকে দেশটির জাতীয় বাদকদলের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়।

রোবটটির মুখায়ব ছিল মানুষের মতো। মঞ্চে প্রথমেই দর্শকদের উদ্দেশে মাথা ঝোঁকাতে দেখা যায়। এরপরই সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানটির লয় নিয়ন্ত্রণ করতে রোবটটি হাত নাড়তে শুরু করে।

শুক্রবারের এই অনুষ্ঠান রোবটের পাশাপাশি পরিচালনা করেন চোই সু-ইয়োল। তিনি বলেন, ‘বাদকদলের প্রধানের শারীরিক ভঙ্গি খুবই নিখুঁত হয়ে থাকে।’ চোই বলেন, ‘রোবটটি আমার ধারণার চেয়েও অনেক ভালোভাবে নিখুঁত শারীরিক ভঙ্গি দেখাতে সক্ষম হয়েছে।’

তবে চোই বলেন, ‘এভার ৬’-এর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো এটা শুনতে পায় না।

অনুষ্ঠানে দর্শকসারিতে ছিলেন লি ইয়ং-জু। তিনি ঐতিহ্যবাহী কোরীয় সংগীত নিয়ে অধ্যয়ন করছেন। তিনি বলেন, রোবটের চাল যদিও তাল রাখার ক্ষেত্রে নিখুঁত ছিল, তবে ‘দমের’ অভাব ছিল। অর্থাৎ বাদকদলকে সম্মিলিতভাবে ও তাৎক্ষণিক পারফরম্যান্সে যুক্ত করার জন্য প্রস্তুত রাখার যে সক্ষমতা, সেটার অভাব ছিল, যা পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে অপরিহার্য বলে মনে করেন লি।

লি আরও বলেন, ‘রোবটটিকে কাজটি করার জন্য আরও কিছু কাজ করতে হবে বলে মনে হচ্ছিল।’

দর্শকসারিতে থাকা ৬২ বছর বয়সী সোং ইন-হোর মূল্যায়নও প্রায় একই রকম। তিনি বলেন, এভার ৬-এর পারফরম্যান্স প্রাথমিক পর্যায়ের বলে মনে হয়েছে। সোং বলেন, ‘সংগীত বোঝার ও বিশ্লেষণ করার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা রোবটটিতে যোগ করা গেলে এটি নিজেই বাদকদলের নেতৃত্ব দেওয়ার কাজটি করতে পারবে বলে আমার ধারণা।’

শুক্রবার সন্ধ্যার পাঁচ পর্বের শোটির তিনটিতে নির্দেশনা দেয় মানবাকৃতির রোবটটি। এর মধ্যে একটি ছিল চোইয়ের সঙ্গে যৌথ নির্দেশনায়।