ডিম পেড়েছে একটি সাদা–কালো রঙের অ্যালবাট্রস পাখি। সঙ্গীর সঙ্গে মিলে পালা করে সেই ডিমে তা দিচ্ছে তারা। আর এ নিয়ে জীববিজ্ঞানীদের মধ্যে হইচই পড়ে গেছে। পাখি ডিম পাড়বে, তা দেবে এবং সময়মতো ডিম ভেঙে বেরিয়ে আসবে ছানা—জীবনচক্রের স্বাভাবিক এই প্রক্রিয়া নিয়ে তবে কেন জীববিজ্ঞানীদের মধ্যে এত হইচই, এমনটাই ভাবছেন তো?
এই হইচইয়ের যথেষ্ট কারণ আছে। যে পাখিটি ডিম পেড়েছে, সেটি কোনো সাধারণ পাখি নয়। সেটি একটি লায়সান অ্যালবাট্রস, নাম উইজডম। জীববিজ্ঞানীদের জানামতে, বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক বুনো পাখি এই উইজডম। এটির বয়স এখন প্রায় ৭৪ বছর। এই প্রজাতির একটি অ্যালবাট্রস সাধারণত ১২ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
ইউএস ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস (ইউএসএফডব্লিউএস) প্রশান্ত মহাসাগরে জাতীয় বন্য প্রাণী অভয়াশ্রম মিডওয়ে অ্যাটল–এ সম্প্রতি ধারণ করা একটি ভিডিওতে উইজডমকে দেখা গেছে। ১৯৫৬ সাল থেকে জীববিজ্ঞানীরা উইজডমের গতিবিধির ওপর নজর রাখছেন। ওই সময় সেটির পায়ে বিশেষ এক ধরনের আংটির মতো ব্যাজ পরিয়ে দেওয়া হয়।
একটি অ্যালবাট্রস সাধারণ পাঁচ বছর বয়স থেকে ডিম পাড়তে শুরু করে। সর্বশেষ উইজডম ডিম পেড়েছিল ২০২১ সালে। এটি ৩০টির বেশি ছানার জন্ম দিয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ এক পোস্টে ইউএসএফডব্লিউএস কর্তৃপক্ষ বলেছে, এ বছর উইজডমকে নতুন সঙ্গীর সঙ্গে দেখা গেছে। তার আগের সঙ্গী আকেয়াকামাইকে কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে না। অ্যালবাট্রস পাখি সাধারণত একটি সঙ্গীর সঙ্গেই জীবন কাটায়। কিন্তু উইজডম অন্তত তিনবার সঙ্গী পরিবর্তন করেছে।
উইজডমের পর সবচেয়ে বয়স্ক পাখির বয়স ৪৫ বছর। প্রতিবছর ইউএসএফডব্লিউএসের জীববিজ্ঞানীরা দুরুদুরু বুকে গভীর আগ্রহে উইজডমের ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন, উইজডম এখনো দারুণ প্রাণচঞ্চল এবং আরেকটি ছানাকে সেটি লালন-পালন করতে সক্ষম হবে।