দুর্নীতির অভিযোগ স্বীকার করলেন সিঙ্গাপুরের সাবেক মন্ত্রী

আদালত প্রাঙ্গণে সিঙ্গাপুরের সাবেক পরিবহনমন্ত্রী এস. ইসওয়ারান, ২৪ সেপ্টেম্বরছবি: এএফপি

সিঙ্গাপুরের সাবেক পরিবহনমন্ত্রী এস. ইসওয়ারান তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতিসংক্রান্ত পাঁচটি অভিযোগ স্বীকার করেছেন। আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে তিনি এ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিশ্বের কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় থাকা সিঙ্গাপুরে এ ধরনের বিচারের ঘটনা বিরল। গত চার দশকের বেশি সময় পর এবারই প্রথম দেশটিতে মন্ত্রী পর্যায়ের কেউ বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন।

নিয়মবহির্ভূতভাবে হাজার হাজার ডলার সমমূল্যের উপহারসামগ্রী নেওয়াসহ বেশ কিছু অভিযোগ ওঠার পর গত জানুয়ারিতে পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করেন এস. ইসওয়ারান। ৬২ বছর বয়সী ইসওয়ারানের বিরুদ্ধে ৩৫টি অভিযোগ আনা হয়েছিল। এর বেশির ভাগই দুর্নীতিসংক্রান্ত। তবে আজ সুপ্রিম কোর্টে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা মুলতবি করা হয়। এর পর কৌঁসুলিরা ৩৫টি অভিযোগের মধ্যে শুধু লঘুতর পাঁচটি অভিযোগ নিয়ে এগোতে থাকেন।

এ পাঁচটি অভিযোগের একটি হলো বিচারকাজে হস্তক্ষেপ এবং অপর চারটি নিয়মবহির্ভূতভাবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উপহার নেওয়াসংক্রান্ত। সিঙ্গাপুরের সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএ এবং দ্য স্ট্রেটস টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসওয়ারান পাঁচটি অভিযোগই স্বীকার করেছেন। সাজা ঘোষণার জন্য অপর ৩০টি অভিযোগও বিবেচনায় নেওয়া হবে।

বিচারকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে ইসওয়ারানের সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে। আর উপহারসামগ্রী নেওয়ার চারটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে।

এর আগে আজ সকালে একটি সাদা রঙের এসইউভি গাড়িতে চড়ে সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছান সাবেক এ পরিবহনমন্ত্রী। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত থাকা সংবাদকর্মীরা তাঁকে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর দিতে রাজি হননি। তিনি সাংবাদিকদের শুধু ‘শুভ সকাল’ বলেন। স্থানীয় সময় সকাল ১০টা দিকে তাঁর বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

আগামী বছরের নভেম্বরে সিঙ্গাপুরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এস. ইসওয়ারান অভিযুক্ত হওয়ায় তাঁর দল ক্ষমতাসীন পিপলস অ্যাকশন পার্টিরও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও অভিযোগের বিষয়ে সরকারিভাবে নোটিশ দেওয়ার পর ইসওয়ারান দল থেকে পদত্যাগ করেছেন।

সিঙ্গাপুরে একটি ফৌজদারি আইনে বলা আছে, সরকারি কর্মকর্তারা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে যাঁদের সঙ্গে কাজ করেন, তাঁদের কাছ থেকে কোনো মূল্যমান থাকা উপহার সামগ্রী নিতে পারবেন না। ইসওয়ারানের বিরুদ্ধে বেশির ভাগ অভিযোগ করা হয়েছে এ আইনের আওতায়।

সাবেক পরিবহনমন্ত্রীর আইনজীবীর দাবি, ওই ব্যবসায়ীরা তাঁর মক্কেলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা থেকে সেসব উপহারসামগ্রী তিনি নিতে পারেন।