অপরাধীদের চেহারা পাল্টে দিত অবৈধ এই হাসপাতালগুলো
প্লাস্টিক সার্জারি করে দাগি আসামিদের চেহারা পাল্টে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফিলিপাইনের কয়েকটি অবৈধ হাসপাতালের বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তার এড়াতে পলাতক আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ব্যক্তিরা এসব হাসপাতালের দ্বারস্থ হতেন। শিগগিরই এসব হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ফিলিপাইন পুলিশ।
ফিলিপাইন পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেন, গত মে মাসে রাজধানী ম্যানিলার উপকণ্ঠ পাসাই সিটির একটি হাসপাতালে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় সেখান থেকে চুল ও দাঁত প্রতিস্থাপন করার যন্ত্রপাতি ও চামড়া সাদা করার রাসায়নিক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
ফিলিপাইনের প্রেসিডেনশিয়াল অ্যান্টি-অর্গানাইজড ক্রাইম কমিশনের মুখপাত্র উইনস্টন জন ক্যাসিও বলেন, ‘এসব হাসপাতালে আপনি একজনকে পুরোদস্তুর নতুন একজন মানুষে রূপ দিতে পারবেন।’ তিনি জানান, ফিলিপাইনে অবৈধভাবে কাজ করা বিভিন্ন অনলাইন ক্যাসিনোর কর্মীরা এসব হাসপাতালে সেবা নেন।
কর্তৃপক্ষ জানায়, আরও দুটি হাসপাতালকে নজরে রাখা হয়েছে। এগুলো পাসাই সিটির ওই হাসপাতাল থেকে চার গুণ বড় বলে মনে করা হচ্ছে।
ফিলিপাইনের অনলাইন ক্যাসিনো বা পোগোস (ফিলিপাইন অনলাইন গেমিং অপারেশন) যারা খেলে, তাদের মধ্যে চীনের লোকজনই বেশি।
উল্লেখ্য, চীনে অনলাইন ক্যাসিনো অবৈধ। তবে পুলিশ বলছে, পোগোসের আড়ালে মানব পাচারের মতো নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানো হয়।
এ ঘটনায় তিনজন চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে দুজন ভিয়েতনামের ও একজন চীনের নাগরিক। অপর দিকে এ ঘটনায় চীনের একজন ফার্মাসিস্ট ও ভিয়েতনামের এক নার্সকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কারণ, ফিলিপাইনে তাঁদের কাজ করার লাইসেন্স ছিল না।
জন ক্যাসিও আরও বলেন, ‘বাইরে থেকে এসব ক্লিনিককে স্বাভাবিক মনে হয়। কিন্তু ভেতরে ঢোকার পর তাদের যন্ত্রপাতি দেখে আপনি অবাক হবেন। এসব হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দরকার হয় না। আপনি পলাতক আসামি কিংবা অবৈধ বিদেশিও হতে পারেন।’
সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের আমলে ফিলিপাইনে অনলাইন জুয়া ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ে। ২০২২ সাল পর্যন্ত তাঁর ছয় বছরের প্রেসিডেন্ট মেয়াদে চীনের সঙ্গে দেশটির সুসম্পর্ক বজায় ছিল। কিন্তু বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।