বিধ্বস্ত হওয়ার আগে যা বলেছিলেন নেপালের উড়োজাহাজের পাইলট
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখরা যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত হওয়া উড়োজাহাজের পাইলট অস্বাভাবিক কোনো বার্তা দেননি। এমনকি উড়োজাহাজটি বিপদে পড়তে যাচ্ছে—এমন কোনো আভাসও পাওয়া যায়নি তাঁর কাছ থেকে। পোখরা বিমানবন্দরের একজন মুখপাত্র এসব তথ্য দিয়েছেন।
ওই মুখপাত্রের নাম অনুপ যোশী। গতকাল রোববার উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে পাইলটের আলাপচারিতার কিছু অংশ তুলে ধরেছেন তিনি। অনুপ যোশী বলেন, পাইলট বলেছিলেন, পর্বতগুলো পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, দৃশ্যমানতা ভালো। আবহাওয়া নিয়েও কোনো সমস্যা নেই। তবে হালকা বাতাস বইছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
ইয়েতি এয়ারলাইনসের ওই উড়োজাহাজে মোট ৭২ আরোহী ছিলেন। দুর্ঘটনার পর তাঁদের মধ্যে ৬৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের কেউ বেঁচে নেই বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, নেপালে গত ৩০ বছরে ঘটে যাওয়া বিমান দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ছিল গতকালের দুর্ঘটনাটি।
অনুপ যোশী বলেন, ওই উড়োজাহাজের বিমানবন্দরের ৩ নম্বর রানওয়েতে অবতরণ করার কথা ছিল। পরে পাইলটকে ১ নম্বর রানওয়েতে নামতে বলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনের খাতিরে একটি উড়োজাহাজকে যেকোনো একটি রানওয়ে ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে। তবে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।
ইয়েতি এয়ারলাইনস ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, পোখরা বিমানবন্দরে অবতরণের মাত্র ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড আগে ইয়েতি এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছিল।
আজ সোমবার উড়োজাহাজটির ককপিটের ভয়েস রেকর্ডার ও ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডারের খোঁজ পেয়েছেন উদ্ধারকারীরা। এগুলো থেকে দুর্ঘটনার কারণ জানা যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার কারণ তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করেছে নেপাল সরকার। আজ দেশটিতে জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলের আশপাশে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা দিব্য ধাকাল। বিবিসিকে তিনি বলেন, গতকাল স্থানীয় সময় বেলা ১১টার পরপরই উড়োজাহাজটি আকাশ থেকে মাটিতে আছড়ে পড়ে। এ সময় তিনি দুর্ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে যান। তাঁর ভাষায়, ‘পাইলট তাঁর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন, যেন কোনো বাড়িঘরের ওপর উড়োজাহাজটি ভেঙে না পড়ে।’