পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর শুধু প্রতিরক্ষায় মনোযোগ দেওয়া উচিত, ব্যবসায় নয়:  সুপ্রিম কোর্ট

ইসলামাবাদে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টছবি: রয়টার্স

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট দেশের সব প্রতিষ্ঠানের অবশ্যই তাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে থাকার ওপর জোর দিয়েছেন। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তার কাছে নিশ্চয়তা চেয়েছেন যে, সশস্ত্র বাহিনী কোনো বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হবে না।

পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি কাজী ফায়েজ ইসা পর্যবেক্ষণে বলেন,  ‘সেনাবাহিনী বিয়ের অনুষ্ঠানের মিলনায়তন পরিচালনা এবং অন্যান্য ব্যবসা করছে। এটা নিশ্চিত করবেন যে তারা কোনো ব্যবসায় যুক্ত হবে না। সেনাবাহিনীর শুধু প্রতিরক্ষায় মনোযোগ দেওয়া উচিত, ব্যবসায় নয়।’

প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ গত বুধবার পাকিস্তানের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর করাচিতে অবৈধ স্থাপনা তৈরির বিরুদ্ধে দায়ের করা আবেদনের ওপর পুনরায় শুনানি গ্রহণ শুরু করেন। বেঞ্চের অপর দুই বিচারপতি হলেন মুহাম্মাদ আলী মাজহার ও বিচারপতি মুসারাত হিলালি।

পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল মনসুর আওয়ানের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রত্যেকের তাঁদের সীমার মধ্যে থাকা উচিত। সেনাবাহিনীর তাদের কাজ করা উচিত এবং আদালতের উচিত তাঁদের কাজটি করা।’

অ্যাটর্নি জেনারেল প্রধান বিচারপতির সঙ্গে একমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, সবাই অবশ্যই তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন—এটাই মূল নীতি। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনার ওপর যদি এ ধরনের নির্দেশনা থাকে, তাহলে আপনার এ বিষয়ে একটি নিশ্চয়তা দেওয়া উচিত।’

এর আগে ইভাকুইয়ি ট্রাস্ট প্রপার্টি বোর্ডের (ইটিপিবি) আইনজীবী আদালতকে বলেন, কিছু ব্যক্তি ইটিপিবির সম্পদের জাল নথি তৈরি করেছে এবং সেগুলো একজন নির্মাতার কাছে বিক্রি করেছেন। এখন সেখানে পাঁচতলা ভবন দাঁড়িয়ে আছে।
তখন বিচারপতি মাজহার নিজেদের জমিতে ভবনটি নির্মাণের সময় ইটিপিবির ভূমিকা কী ছিল তা জানতে চান।

প্রধান বিচারপতি বলেন, করাচিতে সিন্ধু ইমারত নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (এসবিসিএ) সম্পৃক্ততা ছাড়া অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ হতে পারে না।

এ সময় এসবিসিএ’র মহাপরিচালক আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি আদালতকে বলেন যে, এসবিসিএ’র মোট এক হাজার ৪০০ জন কর্মী আছে। তাঁদের মধ্যে ৬০০ জন পরিদর্শক এবং ৩০০ জন জ্যেষ্ঠ পরিদর্শক।

প্রধান বিচারপতি এ সময় এসবিসিএ’র পরিদর্শক ও জ্যেষ্ঠ পরিদর্শকদের সম্পদের অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এফবিআরের (ফেডারেল ব্যুরো অব রেভেনিউ) মাধ্যমে করাচির সাব–রেজিস্ট্রারদের সম্পদেরও নিরীক্ষা করা দরকার।’

আদালতের পর্যবেক্ষণ যে, কর্তৃপক্ষের জ্ঞাতসারেই করাচিতে অবৈধ ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে এবং আবাসিক প্লট বাণিজ্যিক প্লটে রূপান্তর করা হচ্ছে।