বিষধর সাপের কামড়েও ছয় দিন দুর্গম পাহাড়ে বেঁচেছিলেন নারী
অস্ট্রেলিয়ায় তুষারে আচ্ছাদিত পর্বতে ছয় দিন নিখোঁজ ছিলেন এক নারী। গত রোববার তাঁকে ‘আহত’ অবস্থায় উদ্ধার করেছেন দেশটির জরুরি বিভাগের সদস্যরা। তাঁকে খুঁজে পেতে বড় ধরনের অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছিল।
নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) রাজ্যের পুলিশ বলেছে, লোভিসা জোবার্গ নামের ওই নারীর অবস্থান গত রোববার স্থানীয় সময় বিকেলে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। নিখোঁজ থাকা অবস্থায় তাঁকে একটি সাপে কামড়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাঁর শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিয়েছিল। তাঁর একটি পায়ের গোড়ালি ছিল মচকানো।
জোবার্গ আলোকচিত্রী হিসেবে পরিচিত। সন্ধান পাওয়ার পর তাঁকে ঘটনাস্থলেই চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর বর্তমান অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
৪৮ বছর বয়সী এ আলোকচিত্রী এনএসডব্লিউর কোসিয়াসকো ন্যাশনাল পার্কের গভীরে নিয়মিত আসা-যাওয়া করেন। তিনি প্রায় সময় পর্বতে থাকা বন্য ঘোড়ার ছবি তোলেন।
যে গাড়ি নিয়ে জোবার্গ কোসিয়াসকো ন্যাশনাল পার্কের গভীরে গিয়েছিলেন, সেটি ছিল ভাড়া করা। ওই গাড়ির কোম্পানি তাঁর গাড়ি ফেরত না আসা ও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না, এমনটি জানানোর পর জোবার্গের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়।
২১ অক্টোবর এনএসডব্লিউ পুলিশ জোবার্গকে খুঁজে পেতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় প্রচার শুরু করে। প্রশিক্ষিত কুকুর, অগ্নিনির্বাপণ বাহিনীর সদস্য, পার্ক রেঞ্জার এবং তাপ শনাক্তকারী একটি হেলিকপ্টার নিয়ে বড় ধরনের অনুসন্ধান অভিযান শুরু করা হয়।
কিন্তু বেশ কয়েক দিনের অভিযানেও জোবার্গকে খুঁজে না পাওয়ায় উদ্ধারশিবিরে আশঙ্কা বেড়ে যায়। কারণ, কোসিয়াসকো ন্যাশনাল পার্কের চারপাশের এলাকায় রাতের তাপমাত্রা শূন্যের কাছাকাছি নেমে আসে।
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় সময় রোববার বিকেলে জোবার্গকে পাওয়া যায়। কিয়ান্দ্রায় নুঙ্গার ক্রিক ট্রেইল এলাকায় ন্যাশনাল পার্ক ও বন্য প্রাণী সেবার এক কর্মকর্তা তাঁকে খুঁজে পান।
সুপারিনটেনডেন্ট টবি লিন্ডসে গণমাধ্যমকে বলেন, জোবার্গ কয়েক দিন ধরে ঘাসে আচ্ছাদিত দুর্গম পাহাড়ে এলোমেলোভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। এই কর্মকর্তা উদ্ধারকারীদের বলেছেন, তিনি মনে করেন, তাঁকে চার দিন আগে একটি দুধরাজ সাপে কামড় দিয়েছে।
এই প্রজাতির সাপ সাধারণত তেমন একটা আগ্রাসী নয়; বরং লাজুক। কিন্তু এই সাপের বিষ বেশ শক্তিশালী। এ ধরনের সাপের কামড়ের চিকিৎসা দেওয়া না হলে তা প্রাণঘাতী হতে পারে।
সুপারিনটেনডেন্ট টবি লিন্ডসে বলেন, তিনি (জোবার্গ) বেশ ভাগ্যবান বলে এখনো জীবিত আছেন। তাঁকে যে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।