ইন্দোনেশিয়ায় বিয়ে না করে যৌন সম্পর্কে জড়ালে পেতে হবে সাজা
বিয়ে না করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড হবে। ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্ট চলতি মাসে এমন একটি আইন পাস করতে যাচ্ছে। খবর রয়টার্সের।
পাস হতে যাওয়া এই ফৌজদারি দণ্ডবিধির আওতায় প্রেসিডেন্ট কিংবা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অবমাননা এবং ইন্দোনেশিয়ায় রাষ্ট্রীয় আদর্শবিরোধী যেকোনো দৃষ্টিভঙ্গিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক স্থাপনকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
কয়েক দশক ধরে আইনটির খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার উপ–আইনমন্ত্রী এডওয়ার্ড ওমর শরিফ হিয়ারিয়েজ রয়টার্সকে বলেছেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বর নতুন ফৌজদারি দণ্ডবিধি পাস হতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘ইন্দোনেশীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সংগতি রেখে অপরাধ দমন বিধিটি প্রণয়ন করতে পেরে আমরা গর্বিত।’
তবে খসড়া আইনটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইনপ্রণেতা বামবাং উরিয়ান্তো বলেন, নতুন দণ্ডবিধিটি আগামী সপ্তাহেই পাস হয়ে যেতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি ইসলামি সংগঠন খসড়া আইনটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তবে বিরোধীরা বলছেন, আইনটি ১৯৯৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর পতনের পর কার্যকর উদার সংস্কারগুলোর পরিপন্থী।
এই দণ্ডবিধির পূর্ববর্তী খসড়াটি ২০১৯ সালে পাস হওয়ার কথা ছিল। তবে এ নিয়ে তখন ইন্দোনেশিয়াজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছিলেন। তাদের অভিযোগ ছিল, এ ধরনের আইন নাগরিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে।
সরকার বলছে আইনটির খসড়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে সমালোচকেরা বলছেন, আইনে খুব সামান্যই পরিবর্তন এসেছে। ধর্ষণের শিকার নারীর গর্ভপাত বাদে অন্য গর্ভপাতের ঘটনাকে অপরাধ বিবেচনা এবং ‘কালোজাদু’র জন্য কারাদণ্ডের বিধান বহাল থাকছে।
সবশেষ ২৪ নভেম্বর যে খসড়াটি তৈরি করেছে তার ভিত্তিতে রয়টার্স বলছে, বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ঘটনায় সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড হবে। অভিযোগ করার এখতিয়ার শুধু ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের মতো সীমিতসংখ্যক মানুষের কাছে থাকবে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টকে অবমাননার দায়ে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত সাজার বিধান রাখা হয়েছে। শুধু প্রেসিডেন্টই এ অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আন্দ্রিয়াস হারসোনো বলেছেন, এ আইন ইন্দোনেশিয়ার গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় ধাক্কা। তবে ইন্দোনেশিয়ার উপ–আইনমন্ত্রী দাবি করেছেন, নতুন আইন গণতান্ত্রিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করবে না।