বিদ্রোহীদের প্রতি সংলাপের আহ্বানের পরের দিনই বিমান হামলা জান্তার

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিমান হামলার পরবর্তী দৃশ্য। শান রাজ্যের লাশিও শহরেছবি : এএফপি

মিয়ানমারের সামরিক শাসক জান্তা বিদ্রোহীদের দখলে নেওয়া একটি শহরে আজ শুক্রবার নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে। অথচ আগের দিন বৃহস্পতিবার অস্ত্র ত্যাগ করে সংলাপে বসার জন্য বিদ্রোহীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল জান্তা সরকার।

জান্তার গতকালের সংলাপের আহ্বানকে একটি কৌশল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা মনে করেন, প্রতিবেশী চীনকে শান্ত করতে এবং আগামী বছর নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণার প্রতি মানুষের আস্থা তৈরি করতেই সামরিক শাসক সংলাপের ঘোষণা দিয়েছিল জান্তা। জান্তাবিরোধী দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠী ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই সংলাপের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর পরপরই জান্তার (সামরিক শাসন) বিরুদ্ধে দেশটিতে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হয়। গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীরা দেশটির কয়েকটি রাজ্যে বড় ধরনের অভিযান শুরু করে।

গত অক্টোবর থেকে বিদ্রোহীদের ব্যাপক হামলায় দিশেহারা হয়ে পড়ে জান্তা সরকার। দেশটির সংখ্যালঘু বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ও গণতন্ত্রপন্থী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ)’ এসব হামলার নেতৃত্ব দিচ্ছে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো এরই মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিং দখলে নিয়েছে। গত মাসে উত্তর দিকের শান রাজ্যের লাশিও শহর দখলে নেন বিদ্রোহীরা। শহরটির বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। ১৯৬২ সালের পর শহরের এত বড় আর কোনো কেন্দ্র বিদ্রোহীরা দখলে নেয়নি।

আরও পড়ুন

জান্তার গতকালের সংলাপপ্রস্তাব সম্পর্কে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের রিচার্ড হরসি বলেন, সামরিক অভ্যুত্থানের পর জান্তার এটাই প্রথম কোনো সংলাপের প্রস্তাব। এর আগপর্যন্ত তাঁরা সংলাপের কোনো আগ্রহ দেখায়নি।

কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে ‘ধ্বংস’ করার কথা বলছেন বলেও উল্লেখ করেন রিচার্ড হরসি।

জান্তার আজকের বিমান হামলার বিষয়টি মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) নিশ্চিত করেছে। লাশিও শহরটির নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে বিদ্রোহী জোটটির হাতে রয়েছে।

লাশিওর এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে জানান, আমি দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। পাঁচ ব্যক্তি নিহত ও অনেকে আহত হওয়ার কথা শুনেছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইয়াঙ্গুনভিত্তিক এক কূটনীতিক বলেন, জান্তার সংলাপের প্রস্তাবে আমি আন্তরিক পুনর্মিলনের কোনো লক্ষণ দেখছি না।