মিয়ানমারের জান্তার নির্দেশ অমান্য করা নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান গ্রেপ্তার
মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান অ্যাডমিরাল জউই উইন মিন্টকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৮ জুলাই দেশটির জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের নির্দেশে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সোমবার সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।
মিয়ানমারজুড়ে চলমান সংঘাতের মধ্যে রাখাইন রাজ্যের থান্ডউই এলাকার নগাপালি সৈকতের বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান নিয়েছিলেন আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা। সেখানে সেনাসদস্যদের নৌযানে করে পাঠিয়ে হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন জান্তাপ্রধান। তবে কামান ব্যবহার করতে নিষেধ করেন তিনি। ওই নির্দেশ অমান্য করেন অ্যাডমিরাল উইন মিন্ট। এরপর নৌপ্রধান পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা ইরাবতীকে বলেছেন, নগাপালি সৈকতে যেখানে হোটেলগুলো রয়েছে, সেখানে অবস্থান নিয়েছিলেন এএ সেনারা। সেখানে স্নাইপারও ছিল। তাঁদের হটানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মিন অং হ্লাইং। নৌবাহিনীর প্রধান রাজিও হয়েছিলেন। তবে তাঁর প্রস্তাব ছিল, নৌযানে করে সেনাদের সৈকতে নামানোর আগে এএ সদস্যদের কোণঠাসা করতে কামান ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু হ্লাইং ওই প্রস্তাবে রাজি ছিলেন না। তাঁর শঙ্কা ছিল, কামান ব্যবহার করা হলে হোটেলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নৌবাহিনীর ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা যদি কামান ব্যবহার ছাড়া (নগাপালি সৈকতে) শুধু নৌযান নিয়ে যেতাম, তাহলে সবাই মারা যেতাম।’
নগাপালি সৈকতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট ধনকুবেরদের অনেক বিলাসবহুল হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। সৈকতটির ৬৪টি হোটেল ও রিসোর্টের মধ্যে সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ রিসোর্টগুলোর মালিক তাঁরা। এর আগে থান্ডউইতে বোমা ফেলতেও রাজি হননি জান্তাপ্রধান হ্লাইং। কারণ, এই এলাকায় তাঁর স্ত্রী কেইয়ু কেইয়ু হ্লেলের জন্ম হয়েছিল।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া-মিয়ানমার অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রেন্ডশিপ অ্যান্ড কো–অপারেশন ও ট্রেজার অব নগাপালি ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড নামের স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। নগাপালি সৈকতে বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প ও পর্যটনের উন্নয়নের জন্য ওই সমঝোতা করা হয়।