আফগানিস্তানে রাজনৈতিক দল ‘নিষিদ্ধ’ করল তালেবান
আফগানিস্তানে রাজনৈতিক দলগুলোর সব ধরনের কার্যক্রম তালেবান প্রশাসন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। গতকাল বুধবার তালেবান প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশটিতে কার্যকর থাকা শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো ভূমিকা নেই। তাই এসব দলের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
তালেবান সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন বিচারমন্ত্রী শেখ মৌলভি আবদুল হাকিম শারায়ে গতকাল রাজধানী কাবুলে তাঁর মন্ত্রণালয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। কারণ, শরিয়াহ আইনে এসব দলের কোনো স্থান ও ভূমিকা নেই। জাতীয় স্বার্থরক্ষায় এসব দল কোনো কাজ করে না। এমনকি নাগরিকেরাও এসব দলের কার্যক্রম পছন্দ করে না।
পরে বিচারমন্ত্রী আবদুল হাকিমের এ ঘোষণা বিবৃতি আকারে প্রকাশ করা হয়। তালেবাননিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ওই বিবৃতি প্রচার করে।
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, এ ঘোষণা এটাই প্রমাণ করে যে আফগানিস্তানে বহুপক্ষীয় রাজনৈতিক চর্চা বন্ধ করতে চায় তালেবান। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রক্ষমতায় নিজেদের একচেটিয়া অধিকার ধরে রাখার পক্ষে তারা।
২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। ওই সময় তালেবানের প্রত্যাবর্তন ও পশ্চিমাদের বিশৃঙ্খল পশ্চাদপসরণের ঘটনাপ্রবাহ আফগানিস্তানের ওপর দুই দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোটের উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। এ পর্যন্ত কোনো দেশই তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।
ক্ষমতায় এসেই প্রচলিত নানা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনে তালেবান। বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় নারীদের শিক্ষা ও একাকী চলাফেরায়, এনজিও কার্যক্রমে। সম্প্রতি আফগানিস্তানে নারীদের বিউটি পারলার (রূপচর্চাকেন্দ্র) বন্ধেরও নির্দেশ দিয়েছে তালেবান সরকার। এর ধারাবাহিকতায় এবার রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমে লাগাম টানা হয়েছে।